দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর অবশেষে সচল ফেসবুক সহ সোশ্যাল মিডিয়া, ক্ষমা চাইলেন মার্ক জুকেরবার্গ

যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্কঃ দীর্ঘ সময় ধরে অচল থাকার পর অবশেষে স্বাভাবিক হল ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ পরিষেবা।সচল হয় ইনস্টাগ্রামও। সোমবার রাত ৯টার পর থেকে আচমকাই থমকে যায় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এই ভোগান্তি জন্য ক্ষমা চাইলেন ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গ। প্রায় ৬ ঘন্টা বন্ধ ছিল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। ইনস্টাগ্রাম আধিকারিকদের পক্ষ থেকেও ট্যুইট করে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে৷ হোয়াটস অ্যাপ কর্তৃপক্ষের তরফেও ক্ষমা চাওয়া হয়। ঠিক কী কারণে এই ধরণের বড় বিপর্যয় তা অবশ্য কোনওপক্ষই সরকারিভাবে মুখ খুলতে চাইছে না৷ অনলাইনে বিভিন্ন পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার উপর নজরদারি সংস্থা ‘ডাউন ডিটেক্টর’-এর দাবি, ইতিহাসে দীর্ঘতম বিভ্রাটের সাক্ষী থেকেছে ফেসবুক। পরিষেবা ফের চালু হওয়ার পর মঙ্গলবার ভোরের দিকে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) একটি ফেসবুক পোস্টে জুকেরবার্গ বলেন, ‘ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়্যাটসঅ্যাপ এখন আবার কাজ করতে শুরু করেছে। আজকের বিভ্রাটের জন্য দুঃখিত। নিজেদের পছন্দের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে আপনারা আমাদের উপর কতটা নির্ভর করেন, তা আমি জানি।’ যদিও ফেসবুকের চিফ টেকনোলজি অফিসার বলেছেন, ‘১০০ শতাংশে ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে।’ তবে কি কারণে এই বিভ্রাট তাই নিয়ে কিছু বিস্তারিত জানানো হয়নি ফেসবুকের তরফ থেকে। তবে সূত্রের খবর, ফেসবুকের আভ্যন্তরীণ ভুলের জন্যই এই সোশ্যাল মিডিয় প্ল্যাটফর্ম আচমকা বন্ধ হয়ে যায়।
ফেসবুকের ইতিহাসে এটাই কোন বড় আউটেজ যেটা বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬ ঘন্টা । ৪ অক্টোবর রাত ৯:০৭মি থেকে ৫ অক্টোবর মধ্যরাত ৩:৪৫ পর্যন্ত) ফেসবুক সহ ফেসবুকের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হুয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম এর সেবা বন্ধ ছিল। ফেসবুক ডাউন থাকার ঘটনা এর আগেও ঘটেছে তবে সেটা বিশেষ কিছু লোকেশন কিংবা কিছু কিছু দেশের ক্ষেত্রে তবে এবারই প্রথমবার এই ধরনের ঘটনা ঘটলো যেখানে ফেসবুকের হেডকোয়াটারেও সব সেবা বন্ধ ছিল এমনি ফেসবুকের কর্মীরা যারা অনলাইনে ওয়ার্কপ্লেসে কাজ করেন তারাও লগইন হতে পারেননি।
যাইহোক, এখন সবার প্রশ্ন ঘটনাটা আসলে কি ঘটেছিল?
এর মুল কারণ ছিল ফেসবুকের DNS (Domain Name System) সিস্টেম এর সমস্যা। সাধারনত একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম কাজ করে কতগুলো আইপি (ইন্টারনেট প্রোটোকল) এর উপর ভিত্তি করে অর্থ্যাৎ একটি কম্পিউটার যখন অন্য একটি কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে তখন একে অপরকে চিনে থাকে আইপি এড্রেসের মাধ্যমে । একইভাবে আমরা যখন ইন্টারনেটে কোন ওয়েবসাইট কিংবা সার্ভারে প্রবেশ করি তখন মুলত উক্ত সার্ভারে প্রবেশ করি তার নির্ধারিত আইপি অ্যাড্রেসের মাধ্যমে। প্রক্যেকটা সার্ভারের একটি নির্দিষ্ট ইন্টারনেট আইপি থাকে যেটা হয় ইউনিক (মোবাইল নাম্বারের মতো , অন্য কারও সাথে মিলবে না)। যেমন ফেসবুকের অনেকগুলো আইপি এর মধ্যে একটি হলো- 63.69.176.13, কিন্তু একজন সাধারন মানুষের পক্ষে এত আইপি এড্রেস কখনোই মনে রাখা সম্ভব নয়, তাই এর সহজ সমাধানে ব্যবহৃত হয় DNS (Domain Name System) যার কাজ হচ্ছে আইপি এড্রেসকে নাম এ কনভার্ট করা। উদাহরন হিসেবে আমরা যখন facebook.com লিখি তখন এই DNS প্রযুক্তি প্রথমে খুজে বের করে Facebook.com এর সার্ভারের আইপি এড্রেস কি, তারপর facebook.com আর উক্ত সারভার আইপি এড্রেসের সাথে সংযোগ স্থাপন করে আমাদেরকে সারভার পর্যন্ত পৌছে দেয়, ঠিক একইভাবে আমরা যখনই কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি প্রত্যেক ক্ষেত্রেই এই একই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়, আমাদেরকে কষ্ট করে আইপি মনে রাখতে হয় না শুধু ওয়েবসাইটের ঠিকানাটা মনে রাখলেই হয়।
এখন প্রশ্ন থাকতে পারে ফেসবুকের DNS সমস্যা হলে whatsapp আর instagram এও কেন এর প্রভাব পড়বে? এর উত্তর হলো – facebook, instagram & whatsapp এদের সবার ডাটা ই থাকে একটি সারভার সিস্টেমে এবং ব্যাকইন্ডে ডাটাবেস কানেক্টিভিটি এর ক্ষেত্রে সবাই ফেসবুকের DNS সিস্টেম (facebook.com) ব্যবহার করে, তাই ফেসবুকের DNS সমস্যা হওয়াতে বাকিদেরও হয়েছে।