প্রযুক্তির অপব্যবহার! ‘কলিং অ্যাপের’ মাধ্যমে বিধায়ককে ফোন করে খুনের হুমকি, গ্রেফতার ১

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: ফোন করে বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ককে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হল এক যুবক। ধৃতের নাম সামসুদ্দিন মালিক ওরফে হাবিব। হুগলির গুড়াপ থানার ঘোষলা মুসলিমপাড়ায় তার বাড়ি। কয়েকদিন ধরে সে বর্ধমান শহরের একটি হোটেলে রুম ভাড়া নিয়ে ছিল। পূর্ব বর্ধমানের দেওয়ানদিঘি থানার পুলিশ মঙ্গলবার ভোররাতে বর্ধমানের কুড়মুন বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেফতার করে।
সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ এদিনই ধৃতকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে। বিধায়ক নিশীথ মালিককে হুমকি দেওয়ায় ব্যবহৃত ফোন ও ঘটনায় জড়িত বাকিদের হদিশ পেতে তদন্তকারী অফিসার এদিন ধৃতকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সোমনাথ দাস ধৃতকে ৩ দিন পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিকের ফোনে একটি কল আসে। অভিযোগ যিনি ফোন করেন তিনি বিধায়ককে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করার পাশাপাশি মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলেন। একই সঙ্গে ওই ব্যক্তি বিধায়ককে হুমকি দেয় মামলা তুলে না নিলে তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলা হবে। মেমারির তৃণমূল বিধায়ক নার্গিস বেগমের কাছেও একই রকম হুমকি ফোন যায়। বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক এই বিষয়ে দেওয়ানদিঘি থানায় অভিযোগ জানানোর পরেই পুলিশ তদন্তে নামে।
আরও পড়ুন:আনলক-৪ পর্বে শুরু হতে পারে লোকাল ট্রেন পরিষেবা, তবে এখনই খুলছে না স্কুল-কলেজ
কল ডিটেলস খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে যে ফোন নম্বার থেকে বিধায়কের ফোনে হুমকি ফোন কল গেছে সেই ফোন নম্বারটি অভিজিৎ দাস নামে এক ব্যক্তির। তার বাড়ি শক্তিগড় থানার নান্দুড়ে।পুলিশ তাকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পারে ‘কলিং আ্যাপের’ সাহায্যে জালিয়াতি করে অভিজিৎতের ফোন নম্বর ব্যবহার করে শহর বর্ধমানের নিবেদিতাপল্লির শুভজিৎ রায়চৌধুরী ও সামসুদ্দিন মালিক বিধায়ককে ফোন করেছিল।
পুলিশ আরও জানতে পারে দিন দু’য়েক আগে আগ্নেয়াস্ত্র সহ শুভজিৎকে গ্রেফতার করেছিল বর্ধমান থানার পুলিশ। এদিন সামসুদ্দিনকে গ্রেফতার করার পর পুলিশ তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে যায়, কলিং অ্যাপের সাহায্যে জালিয়াতি করে অভিজিৎ-এর নম্বর ব্যবহার করে তারা বিধায়ককে হুমকি দেয়। এইভাবে হুমকি দিয়ে তারা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে বলেও পুলিশ জেনেছে। ‘কলিং অ্যাপের ’ মাধ্যমে জালিয়াতি করে তার ফোন নম্বর ব্যবহার করে
হুমকি দিয়ে ফোন করার বিষয়টি নিয়ে অভিজিৎও শক্তিগড় থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন। সামসুদ্দিন গ্রেফতার হলেও, পুলিশ মনে করছে ঘটনার সঙ্গে আরও দু’জন জড়িত রয়েছে। সামসুদ্দিনকে হেফাজতে নিয়ে পুলিশ তাদেরও খোঁজ চালাচ্ছে।