ভারত-আমেরিকা প্রকৃত বন্ধু, কমলা হ্যারিসকে বার্তা মোদির
সন্ত্রাসে পাক ভূমিকার কথা বললেন হ্যারিস

নিজস্ব প্রতিনিধি: বেশ কিছুদিন আগে টেলিফোনে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার আমেরিকা সফরে গিয়ে বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করলেন মোদি। আর সেই বৈঠকে বন্ধুত্বের বার্তা দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমেরিকা ভারতের স্বাভাবিক মিত্র। দুটি দেশের মূল্যবোধের ক্ষেত্রে মিল রয়েছে। আর ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস বলেন,” ভারতের সঙ্গে আমার পারিবারিক বন্ধন। দুই দেশের সম্পর্ক উন্নতির ক্ষেত্রে আমি কাজ করে যাব।” সবচেয়ে বড় কথা এদিনের বৈঠকে কমলা হ্যারিস নিজেই সন্ত্রাসে পাকিস্তানের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। যে বিষয়টি খুশি করেছে ভারতকে। বৈঠকে কমলা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের অন্দরে যে সমস্ত সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইসলামাবাদকে জানিয়েছেন তিনি। যাতে এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ভারত এবং আমেরিকার নিরাপত্তা বিঘ্নিত না করে।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে মোদি এবং কমলার বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে ভারত এবং আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মজবুত করার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গণতন্ত্রের উপর হামলা, আফগানিস্তান, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিস্থিতির মতো বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছিল কমলা-মোদির বৈঠকে। কিন্তু সন্ত্রাসের প্রশ্নে কমলা হ্যারিস যেভাবে পাকিস্তানের কথা তুলে ধরেছেন, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মোদির সফর সঙ্গী ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ যখন উঠল ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমলা হ্যারিস) নিজেই ওই বিষয়ে পাকিস্তানের ভূমিকার কথা তুললেন।’’ তাঁর কথায়, কমলা স্বীকার করেছেন পাকিস্তানের ভিতর জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি সক্রিয় রয়েছে। কমলার বক্তব্য নিয়ে শ্রিংলা বলেছেন, ‘‘তিনি (কমলা) পাকিস্তানকে বলেছেন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাতে ভারত এবং আমেরিকার নিরাপত্তায় সন্ত্রাসবাদীরা কোনও প্রভাব না ফেলে। প্রধানমন্ত্রী সীমান্তে সন্ত্রাসের বিষয়টি তুলে ধরে জানান, ভারত কীভাবে দশকের পর দশক ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি কী ভাবে পাকিস্তানের সহযোগিতা পায়, সেই বিষয়টিও বৈঠকে তুলেছেন মোদি।’’
এদিকে কমলা হ্যারিসকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে আমেরিকার পাঁচ শিল্পকর্তার সঙ্গে কথা বলেন মোদি। ভারত যেভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণ করছে, তার প্রশংসা করেন অ্যাডব কর্তা শান্তনু নারায়ণ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ভারতের বাজারে ডিজিটাল বিপ্লবের স্বপ্ন দেখিয়েছেন কোয়ালকম কর্তা ক্রিশ্চিয়ানো আমোনে। তিনি বলেন,” ফাইভ-জি ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। ভারতের বাজার গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে রফতানির একটা বড় ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে ভারত।” পাল্টা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারত বিনিয়োগের শ্রেষ্ঠ জায়গা। সবাইকে ভারতে শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে আমেরিকায় পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান প্রবাসী ভারতীয়রা। প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে সবার উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।