সোমবার যুগশঙ্খ সংবাদপত্রের উল্লেখযোগ্য খবরগুলো পড়ুন (দ্বিতীয় অংশ)
বাংলায় একদিনে আক্রান্ত বেড়ে ১০১, মৃত্যু ৬
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, ১৭ মে: শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আরও ১০১ জন করোনা আক্রান্ত হলেন। মৃত্যু হয়েছে আরও ৬ জনের। ফলে মোট আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৬৭৭। মোট মৃত্যু ১৬৬। করোনা শরীরে থাকাকালীন আরও ৭২ জনের মৃত্যুর হিসাব ধরলে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৩৮ জনের। একই সঙ্গে ২৪ ঘন্টায় আরও ৬৭ জন সুস্থ হওয়ায় রাজ্যে মোট সুস্থ ৯৫৯। সুস্থ হওয়ার হার ৩৫.৮২ শতাংশ। রবিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বুলেটিন অনুযায়ী, এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ১৪৮০ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৭০৬ জনের, যা আগের দিনের তুলনায় ৯২৩ বেশি। গত তিন দিনে ১৩ হাজারেরও বেশি টেস্ট হয়েছে। তা সত্ত্বেও সংক্রমণের সংখ্যা তিন দিনে সব মিলিয়ে ৩০০ আসায় কিছুটা স্বস্তিতে স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকরা।
এছাড়া এদিনের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, কলকাতায় নতুন করে ৪৬ জন আক্রান্ত। ফলে কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১৩১১। আর কলকাতাতেই মৃত্যু হয়েছে এদিনের নতুন ৬ জনের। তাই কলকাতাতেই এদিন পর্যন্ত মোট মৃত্যু ১৬০ জনের। সংক্রমণ বেড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ এবং পশ্চিম মেদিনীপুরেও। উল্লেখ্য, এদিন উত্তর দিনাজপুরে তিন জন আক্রান্তের সন্ধান মেলায় এই জেলে গ্রিন জোন থেকে বদলে গিয়েছে অরেঞ্জ জোনে।
নার্সদের ইস্তফা আটকাতে মুখ্যসচিবকে চিঠি হাসপাতালগুলির
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, ১৭ মে: নার্সদের ইস্তফা আটকাতে রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হল বেসরকারি হাসপাতালগুলি। পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যসচিবকে চিঠি দিল বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠন।
যেভাবে একের পর এক নার্স ইস্তফা দিচ্ছেন, তাতে এরপরে রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যেই দু’দফায় সাড়ে তিনশো জন ভিনরাজ্যের নার্স ছেড়ে গিয়েছেন। তাই এই সমস্যার সমাধান এবং মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখল অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটালস অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। চিঠি পাঠানো হয়েছে নার্সিং কাউন্সিল অব ইন্ডিয়াকেও।
এদিকে রাজ্য ছেড়ে নার্সদের একের পর এক চলে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য ভবনও। শনিবার রাতের মধ্যেই হাসপাতালে নার্সের সংখ্যা জানতে চেয়ে একটি বিশেষ চিঠি পাঠানো হয় সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালকে। আর রবিবারের দুপুরের মধ্যেই সমস্ত হাসপাতালগুলি থেকে সেই তথ্য জমা পড়েছে স্বাস্থ্য ভবনে।
প্রসঙ্গত, যে সব রাজ্যের নার্সরা এ রাজ্যের হাসপাতালগুলি ছেড়ে যে সব রাজ্যে চলে যাচ্ছেন, সে সব রাজ্যে সংক্রমণের হার খুবই কম। এদিকে কলকাতায় করোনা সংক্রমণ ২৫০০ পেরিয়ে গিয়েছে শনিবারই। তাই সংক্রমণের দাপট না কমলে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে কাজ চালাতে নারাজ নার্সরা। সেক্ষেত্রে তাঁরা চাকরি ছেড়ে দিতেও পিছপা নন। কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে কিছুতেই রাজি নন তাঁরা। অথচ, এঁদের নার্সিংয়ের উপরেই নির্ভরশীল কলকাতার বহু বিখ্যাত হাসপাতাল, নার্সিংহোম।
এই পরিস্থিতিতে অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটালস অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছে, এই নার্সরা যে সব রাজ্যের বাসিন্দা, সেই সব রাজ্য সরকারের সঙ্গে যেন নবান্নের তরফে কথা বলা হয়। নার্সরা এই রাজ্যেই কাজ করুন। নার্সিং কাউন্সিলকেও হস্তক্ষেপ করতে আবেদন করা হয়েছে চিঠিতে।
এদিকে স্বাস্থ্য ভবন থেকে চিঠি আসার পর প্রত্যেক বেসরকারি হাসপাতালে কত জন নার্স ছিলেন বা আছেন, কে কোন পোষ্টে কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে কতজনের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বা অন্য রাজ্যে, অন্য রাজ্যের বাসিন্দা হলে কোন রাজ্যের কত বাসিন্দাএখানে নার্সিংয়ের কাজ করেন ইত্যাদি জানতে চাওয়া হয়। এই রাজ্যের সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালে এই মুহূর্তে নার্সদের সংখ্যা ও সম্পর্কিত তথ্য জেনে নিতে চায় স্বাস্থ্য দফতর। সেই মত সমস্ত হাসপাতাল থেকে তা স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয়। গোটা তথ্যটি নিজেদের কাছে রাখার পাশাপাশি নবান্নেও পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক স্বাস্থ্য আধিকারিক। খুব দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
করোনা ঠেকাতে বাংলায় আজ থেকে সার্ভে
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, ১৭ মে: ইতিমধ্যেই রাজ্যে ২৬৭৭ জন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। গড়ে ১০০ জন করে প্রত্যেক দিনই নতুন করে আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। দু’তিনটি জেলা আগে থেকেই বিপদসীমার ওপরে থাকলেও হুগলি, মালদার মত কিছু জেলায় আচমকাই সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। তাই বাংলায় করোনা সংক্রমণের ট্রেন্ড বুঝতে এবার সোমবার থেকে ২৩ জেলায় ‘সেন্টিনেল সার্ভে’ শুরু করতে চলেছে স্বাস্থ্য দফতর। এই নিয়ে জারি হয়েছে নির্দেশিকাও।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শুধু করোনা রোগীকে চিহ্নিতকরণ এবং চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়াই নয়, কোন জেলায় কি হারে সংক্রমণ বাড়ছে সেই পরিস্থিতি একবার দেখে নেওয়া দরকার। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সংক্রমণের গতিরোধ করা যেতে পারে। আর যেহেতু হাসপাতালেই সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী ভর্তি আছেন, তাই তাদের উপর ভিত্তি করেই এই সমীক্ষা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সার্ভের প্রথম পর্যায়ের জন্য ইতিমধ্যেই প্রত্যেক জেলা থেকে ১০০ জন কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি এবং ১০০ জন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তার পরীক্ষা করে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির আভাস পাবেন রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের সমস্ত জেলার বিভিন্ন প্রান্তের হাসপাতাল থেকে কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করবে প্রত্যেক জেলার জন্য বরাদ্দ ৫ সদস্যের একটি বিশেষ দল। বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসা অথবা ইন্ডোরে ভর্তি রোগী থেকে প্রসূতি, এমনকি যাঁদের শ্বাস কষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণ বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ নেই, এঁরা সবাই কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবেন। অন্যদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স থেকে স্বাস্থ্য কর্মী-সহ যাঁরা প্রতিদিন নানা ভাবে সম্ভাব্য করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা করছেন, তাঁরা সবাই বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হবেন। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘আমরা গ্রিন, রেড, অরেঞ্জ — সব জোনেরই হাই এবং লো রিস্কের নমুনা সংগ্রহ করে সেই রিপোর্ট বিশ্লেষণ করব। প্রতি ১৫ দিন অন্তর এই নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। সেই অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য কর্মসূচি চূড়ান্ত করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা হবে।’ কিন্তু এলাকায় গিয়ে এই সমীক্ষা করা হচ্ছে না কেন? ওই স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, এলাকায় করোনা রোগী চিহ্নিত না হলে পরিস্থিতি বোঝা সম্ভব নয়। সেই কাজ করছেন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই সমীক্ষায় সংক্রমণের গতি অনুধাবন করতে রাজ্যের হাসপাতালগুলিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।
হাওড়া থানার দুই পুলিশ কর্মী করোনা পজিটিভ, আতঙ্ক
মনোজ চক্রবর্তী, হাওড়া, ১৭ মে: এবার করোনা আক্রান্ত হলেন হাওড়া থানার দুই কনস্টেবল। রবিবার হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে এই খবর মিলেছে। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে হাওড়া থানার অন্দরে।
জানা গিয়েছে, ওই দুই পুলিশকর্মীকে ভর্তি করা হয়েছে গোলাবাড়ি থানা এলাকার আইএলএস হাসপাতালে। সূত্রের খবর, দু’দিন আগে ওই দুই কনস্টেবলের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। শনিবার সেই রিপোর্ট স্বাস্থ্য দফতরের হাতে আসে। এরপরই ওই দু’জনকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।এছাড়া আরও দু’জন পুলিশকর্মীকে হোম কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগেও শিবপুর থানায় ১৬ জন পুলিশ কর্মী এবং সাঁতরাগাছি থানার দু’জন পুলিশ কর্মী করোনা আক্রান্ত হন। বর্তমানে শিবপুর থানার একজন ছাড়া সবাইকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর ।
তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তেজনা ডোমকলে! গুলিতে মৃত্যু কিশোরের
কৌশিক অধিকারী, ডোমকল, ১৭ মে: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ গেল এক নিরীহ কিশোরের। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের ডোমকলে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কিশোরের নাম সাজিবুল সেখ (১৬)। রবিবার সকালে মাঠে কাজ করতে যাওয়ার সময় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান ওই কিশোর। দুস্কৃতীদের জোড়া গুলি লাগে তাঁর গায়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরের ।
ডোমকল নতুনপাড়া এলাকায় গত দুইদিন ধরে তৃণমূল গোষ্ঠী সংঘর্ষ চলছে। ইতিমধ্যেই শনিবার মোজাম্মেল শেখ নামে একজনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার জেরে রবিবার সকালে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা।
ডোমকল থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ডোমকলের এসডিপিও ফারুক মহম্মদ চৌধুরী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এসডিপিও ফারুক মহম্মদ চৌধুরী জানান, কী কারনণ এই খুন, তার তদন্ত শুরু হয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুরো সংবাদপত্র পড়তে সাবস্ক্রাইব করুন
epaper.jugasankha.in