সাংবাদিকদের প্রশ্নের মধ্যেই রাহুল সিনহা প্রসঙ্গে বিরোধীদের জল্পনা ওড়ালেন মুকুল রায়

জয়দেব লাহা, দুর্গাপুর: শনিবার বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অপসারিত হন রাহুল সিনহা। সেইসঙ্গে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতির পদে বসেন মুকুল রায়। পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। এদিকে এই ঘটনা ঘিরে থেকে রাজ্য-রাজনীতিতে তৈরি হয় চাপান-উতোর। প্রশ্ন ওঠে তাহলে কোন পথে বিজেপির প্রাক্তন ওই রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন সর্ব ভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা? আজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের মধ্য দিয়েই বিরোধীদের প্রশ্নের জবাব দেন মুকুল রায়।
আজ রবিবার পুরুলিয়া যাওয়ার পথে কাঁকসার বাঁশকোপা টোলগেট এলাকায় ক্ষণিকের চা পানের বিশ্রামে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নব নিযুক্ত বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় বলেন, ‘রাহুল বাংলার মুখ। দীর্ঘদিন ধরে দল করছে। কি একটা কথা বলেছে, এটা কে ধরার কোনও মানে হয় না’।
গতকাল পদ থেকে অপসারণের পরেই রাহুল সিনহা অভিমানের সুরে বলেন, ‘চল্লিশ বছর ধরে বিজেপির সেবা ও সৈনিক হিসাবে কাজ করেছি। জন্মলগ্ন থেকে সেবা করার পুরস্কার এটাই, যে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আসছেন তাই আমাকে সরতে হবে। এর থেকে বড় দুর্ভাগ্যের কিছু হতে পারে না। পার্টি যে পুরস্কার দিল, সে পুরস্কারের পক্ষে বিপক্ষে কিছু বলতে চাই না। যা বলার ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে বলব। এবং আমার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করব।” তার এই মন্তব্য রীতিমতো রাজ্যজুড়ে জল্পনা শুরু হয়।
রবিবার কার্যত সেই জল্পনা উড়িয়ে দেন বিজেপির নব নিযুক্ত সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়। পাশাপাশি মুকুল রায়, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে দলের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বলেন,” রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবুর নেতৃত্বে আগামীদিনে ভালো ফল করবে।”
আরও পড়ুন:কুখ্যাত গরু মাফিয়া এনামুল হকের খোঁজে জোরদার তলাশি চালাচ্ছে সিবিআই
প্রসঙ্গত, প্রায় তিন বছর আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন একদা তৃণমূলের চাণক্য মুকুল রায়। যোগ দেওয়ার পর একাধিক নেতাকে তৃণমূল থেকে এনেছেন তিনি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে অভূতপুর্ব সাফল্যের কান্ডারি হিসাবে মুকুল রায়কে কৃতিত্ব দিয়েছে। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে মুকুল রায়ের দূরত্ব বাড়তে থাকে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। এমনকী পুরনো দলে ফেরার জল্পনাও জোরালো হয়ে ওঠে।
এদিকে ২০২১-এ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ময়দানে নামে গেরুয়া শিবির। সেই মতো দিল্লিতে দফায় দফায় চলে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা। বাংলা দখলের জন্য যুব সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে দায়িত্ব দেওয়া হয় সাংসদ সৌমিত্র খাঁ কে। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসে সম্প্রতি ততই সর্ব ভারতীয় নেতৃত্বের কাছে গুরুত্ব বাড়তে থাকে মুকুল রায় ও তাঁর অনুগামীদের। শনিবার বিজেপির সর্ব ভারতীয় সংগঠনের রদবদল হয়। তাতে রাজ্যের অনুপম হাজরা, রাজু বিস্তার মতো যুবকর্মীদের যেমন জায়গা দেওয়া হয়। তেমনই জাতীয় সংগঠন থেকে রাহুল সিনহার মতো বাংলার পুরনো দিনের নেতাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আবার তৃণমূল থেকে আসা মুকুল রায়কে সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি করা হয়। আর এই রদ বদলের পরেই শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা।