পূর্বস্থলীতে নিজের ছেলেকে খুন, অবশেষে গ্ৰেফতার বাবা
নিজস্ব প্রতিবেদক, পূর্বস্থলী: একমাত্র পুত্রকে নৃশংসভাবে খুন করার পরেই তার বাবাকে গ্ৰেফতার করল পূর্বস্থলী থানার পুলিশ। ধৃতের নাম আবদুল সালেক। বাড়ি ওই এলাকার হামিদপুরে। সোমবার তাকে কালনা মহকুমা আদালতে তোলা হয় ও তাকে চারদিনের পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হয়। স্নেহের একমাত্র পুত্রকে রাগের বশে মেরে ফেলার ঘটনায় তার চোখেমুখে এইদিন অনুশোচনা ও আফসোসের ছবিই ফুটে ওঠে।
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে ছেলে আলিমউদ্দিন শেখকে খুন করে ফেরার হয়ে যায় পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সী আবদুল সালেক। তারপর থেকেই তার সন্ধান চালানো হচ্ছিল। এরপর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার গভীর রাতে গড়াগাছা বাসস্ট্যান্ড থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পাশের গ্রামের ১৯ বছরের তরুণীর সঙ্গে ছেলের সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি আবদুল সালেক। ছেলেকে তার ওই প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দিতেও বারবার বলেছিলেন। কিন্তু তারপরও ছেলে ওই প্রেমিকাকেই বিয়ে করবে বলে অনড় ছিলেন। বাড়ির ছাদ থেকে ফোন করে প্রেমিকার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেও চলছিলেন আলিমউদ্দিন। আর একাধিকবার তা লক্ষ্য করার পর আবদুল সালেকের মাথায় খুন চেপে বসে। শনিবার রাত প্রায় ১২ টা নাগাদ ছেলেকে প্রেমিকার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেখে কার্যত তাড়া করে খুন করে সে। ছেলেকে তার স্বামীর হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন আলিমউদ্দিনের মা রেজিনা বিবি। এই খুনের ঘটনায় রেজিনাই তার স্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধরা পড়ার পর প্রথমেই নিজের দোষ স্বীকার করে নেন আবদুল সালেক। পাশাপাশি তিনি পুলিশকে জানান, ওই মেয়ের সঙ্গে বিয়েতে কিছুতেই রাজি ছিলেন না। তার রাগের বশেই খুন করেছেন। পুলিশের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়ে ঘাতক বাবা বলেন, রাগ থেকে এই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছি। বারবার ছেলেটার মুখটা মনে পড়ছে। জানি এই অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই। স্বামী গ্রেফতার হওয়ার খবর পেয়েছেন রেজিনা বিবিও। যদিও তিনি থানায় তার সঙ্গে দেখা করতেও যাননি। রেজিনা বিবি ছেলের মৃত্যুশোকে কার্যত বিছানায় শয্যাশায়ী।