সেনা অভ্যুত্থানের সাক্ষী আফ্রিকা, উত্তাল মালি, আটক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সেনা অভ্যুত্থানের সাক্ষী থাকল আফ্রিকা মহাদেশ। ক্ষমতা দখল করেছে বিদ্রোহী সেনারা। সামরিক বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতা পদত্যাগ করেছেন। এর আগে তাঁকে ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বোউবোউ সিসেকে আটক করে রাজধানী বামাকোর একটি সেনাঘাঁটিতে নিয়ে যায় সৈনিকরা।
সূত্রে খবর, বেতন ও ভাতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তোষ রয়েছে মালির সরকারি বাহিনীর মধ্যে। তার উপর জিহাদিদের সঙ্গে লাগাতার লড়াই নিয়েও সৈনিকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। তাছাড়া, প্রেসিডেন্ট কেইতার আমলে অর্থনৈতিক অব্যবস্থা ও সাম্প্রদায়িক হিংসা বেড়ে যাওয়া নিয়েও তাঁর উপর অনেকের ক্ষোভ তৈরি হয়। ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হলেও ভোটে কারচুপির অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে ক্ষুব্ধ সৈনিকরা মঙ্গলবার দুপুরের প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে সেখানে থাকা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী দু’জনকেই গ্রেফতার করে।
মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হয়ে টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে সরকার ও পার্লামেন্ট ভঙ্গের কথা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বোউবাকার কেইতা। তিনি বলেন, ‘আমাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য কোনওরকম রক্তপাত হোক, সেটা আমি চাই না। যদি আজ আমাদের সেনাবাহিনীর একটি নির্দিষ্ট অংশ নিজেদের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সমাপ্তি টানতে চায়, আমার সামনে কি সত্যিই আর কোনও বিকল্প আছে?’ এর আগে তাঁকে ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বোউবোউ সিসেকে আটক করে রাজধানী বামাকোর একটি সামরিক ক্যাম্পে নিয়ে যায় বিদ্রোহী সৈনিকরা। মালির কাটি সামরিক ঘাঁটির ডেপুটি কম্যান্ডার কর্নেল মারিক ডিয়াউ এবং জেনারেল সাদিও কামারা এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: আইএস জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার চিকিৎসক
আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বহু আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী মালির এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। দ্রুত প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি দাবি করা হয়েছে। বিদ্রোহী সেনাদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে ব্যারাকে। তবে পরিস্থিতি যা, তাতে বিদ্রোহী সেনারা সে কথায় কান দেবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। বিদ্রোহীদের মার্চ মঙ্গলবার সকালে আচমকাই কাটির সেনা ছাউনিতে বিদ্রোহ শুরু হয়। অস্ত্র তুলে নেয় বিদ্রোহী সেনারা। প্রথমে তারা সেনা ছাউনির অফিসারদের আটক করে। এর পর ছাউনির বাইরে বেরিয়ে এসে একে একে সরকারি আধিকারিকদের আটক করা হয়।
এদিকে, বিদ্রোহের ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পরে রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ১৫টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ইকোনমিক কমিউনিটি অফ ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস ঘোষণা করেছে যে, তারা মালির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেবে, সব ধরনের অর্থনৈতিক আদানপ্রদান স্থগিত করবে এবং জোটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম থেকে আপাতত মালি বাইরে থাকবে।