বিড়ি বাঁধলেই পেটে খাবার জোটে, একুশের নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের সুতিতে বহুমুখী লড়াই হতে পারে

মোকতার হোসেন মন্ডল: ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের সুতিতে বহুমুখী লড়াই হতে পারে। তৃণমূল কংগ্রেস, বাম-কংগ্রেস জোট, বিজেপি ছাড়াও আরও বেশ কিছু দল এবারের নির্বাচনে জোরদার লড়াই করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সুতির নারীদের বড় অংশ বিড়ি কাজের সঙ্গে যুক্ত। শিশুদের অনেককে বিড়ি বাঁধতে দেখা যায়।
জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় না থাকার ফলে উচ্চ শিক্ষা থেকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। কৃষি ছাড়াও রাজমিস্ত্রির কাজ করে বহু মানুষ। তাছাড়া বিভিন্ন রাজ্যে এখানকার শ্রমিকদের কাজে যেতে দেখা যায়। অল্প সংখ্যক লোক চাকুরিজীবী। মুর্শিদাবাদ জেলার আর পাঁচটা বিধানসভার মতো এই এলাকাও দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত বলে অভিযোগ। স্থানীয় মানুষ বলছেন, জল নিকাশির সমস্যা, রাস্তাঘাটের সমস্যা আছে।
এখনও রাস্তায় আলো নেই। তাছাড়া মাঝেমধ্যে গঙ্গা ভাঙন হয়। সকল নাগরিকের জন্য পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় একজন বলছেন, দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও আমুহা ব্রিজ গড়ে উঠেনি। ফিডার ক্যানেলের দক্ষিণ পাড়ে পাকা রাস্তাঘাট হয়নি। তবে বিদ্যুৎ পরিষেবা ভালো বলে অনেকে জানিয়েছেন। আগের সরকারের চেয়ে এখন তুলনামূলক ভালো কাজ হচ্ছে বলেও অনেকের অভিমত।
সমস্যা ও সম্ভাবনার সুতিতে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের হুমায়ুন রেজা ৮৪০১৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তৃণমূল কংগ্রেসের ইমানি বিশ্বাস ৮০০৬৭ ও বিজেপির সম্রাট ঘোষ ১৩০৫১ ভোট পান। বামফ্রন্ট অর্থাৎ আরএসপির নিজামুদ্দিন ৩৯৯১ ভোট পান।
কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সুতিতে তৃণমূল কংগ্রেস ৯৪৯১১ ভোট পেয়ে নজির তৈরি করে। বামফ্রন্ট, কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বিজেপি। গেরুয়া শিবির ৫০৯৫৭ ভোট পায়। আর কংগ্রেস ২৯২৯০ ও সিপিএম ১০২০৯ ভোট পায়। রাজনৈতিক মহল বলছে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সুতিতে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের বড় অংশের ভোট গেছে তৃণমূল ও বিজেপিতে। ২০১৬ থেকে ২০১৯, মাত্র এই সময়ে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস তাসের ঘরের মতো ভেঙে গেল। ষোলোতে যে বিজেপি মাত্র ১৩০৫১ ভোট পেয়েছে, মাত্র তিন বছরের মধ্যে উনিশে এসে দলটি ৫০৯৫৭ ভোট পায়। সংখ্যালঘু মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বিজেপির এই উত্থান নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে।
কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভায় বিজেপি কোনও ফ্যাক্টর হবেনা বলে অনেকে মনে করছেন। একটি রাজনৈতিক দলের নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, লোকসভার প্রেক্ষাপট আলাদা ছিল। বিধানসভায় বিজেপি তেমন কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না। এবার সুতিতে বহুমুখী লড়াই হতে পারে। তৃণমূল কংগ্রেস, বাম-কংগ্রেস, বিজেপি, ওয়েলফেয়ার পার্টি সহ আরও কিছু দল ও ব্যাক্তি লড়াই করতে পারে।