সাপের হাত থেকে গ্রামবাসীদের বাঁচাতে সাপুড়ের দ্বারস্থ নাদনঘাট পঞ্চায়েত

অভিষেক চৌধুরী, কালনা: একদিকে করোনা মহামারীর আতঙ্ক, আর অন্যদিকে বিষধর সাপের উপদ্রব। আর এই দুইয়ের মাঝে পড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাট পঞ্চায়েতের দীর্ঘপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের জীবন। সাপের কামড়ে অকালে মৃত্যুও হয়েছে বেশ কয়েকজনের। তাই শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় দেখতে না পেয়ে গ্রামের মানুষজনকে বাঁচাতে সাপুড়ের দ্বারস্থ হল স্থানীয় পঞ্চায়েত।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায় যে, গত একমাস ধরে নাদনঘাটের দীর্ঘ পাড়া গ্রামে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে একাধিক বিষধর সাপ। আর সেই সাপের দংশনে এই কয়েক দিনে এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। শুধু তাই নয় সাপের দংশনে আক্রান্তও হয়েছেন ১৮ জন। তারা প্রাণে বেঁচে গেলেও বেশ আতঙ্কে রয়েছেন তাদের পরিবার। গ্রামের বাসিন্দাদের বক্তব্য, গ্রামের রাস্তায়, বাড়ির ভেতর ঢুকে ছোবল মারছে সাপ। আর এই আতঙ্কে চলাফেরা করাও দায় হয়ে উঠেছে। এই কারণে রাতের ঘুমও উড়ে গেছে তাদের।
সাপের ছোবল খেয়েও যারা প্রাণে বেঁচে যাওয়া পিংকি খাতুন, অমিত গুপ্ত, লিলি বিবি, ফিরোজ মন্ডলরা বলেন, মূলত চন্দ্রবোরা, গোখরো, ডোমনা চিতির মতো বিষধর সাপের উপদ্রব এর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে তাদের। আর তাই গ্রামের মানুষকে বাঁচাতে স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে সাপ ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। আর এই কারণেই ডাক পড়ে পনেরোজন সাপুড়ের। তাই সোমবার সকাল থেকেই শুরু হয় সাপ ধরার অপারেশন আর তা সফলও হয়।
এই বিষয়ে নাদনঘাট পঞ্চায়েতের সদস্য কামালউদ্দিন সেখ বলেন,‘এই কয়েক দিনের দীর্ঘপাড়া গ্রামের মধ্যেই বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।সকলেই বেশ আতঙ্কে রয়েছেন। আর এই কারণে গ্রামের মানুষজনকে বাঁচাতে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে সাপ ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। মেমারী থেকে আসা সাপুড়েরা এইদিন গোখরো, চন্দ্রবোড়া, কালাচের মতো আটটি বিষধর সাপ ধরেন। এইগুলিকে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’
যদিও ওই গ্রামের মানুষকে সচেতন ও সতর্ক করতে বিজ্ঞান মঞ্চের অন্যতম সদস্য ও জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক তাপস কুমার কার্ফা বলেন, ‘চলাফেরার জায়গা ও বাড়ির আশেপাশে থাকা আবর্জনা সহ ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলতে হবে। শুধু তাই নয়, ব্লিচিং পাউডার ছড়াতে হবে।জোরালো আলো জ্বালাতে হবে। কারণ সাপ আলোকে এড়িয়ে চলে। আলো জ্বালিয়ে ও মশারি টাঙ্গিয়ে শুতে হবে।যতটা সম্ভব পা ঢাকা জুতো পড়ে চললে ভালো হয়।’