
শ্যামল কান্তি বিশ্বাস : প্রতিনিয়ত ব্যাঙের ছাতার মতো রমরমিয়ে গজাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিউজ চ্যানেল, আশঙ্কা গুনগতমান ঠিক রাখা সম্ভব হবে তো! কারণ যারা এই পেশায় আসছেন, এদের অধিকাংশের ই একটি বিরাট অংশের ব্যক্তিগত প্রোফাইল, বিষয়টিকে নিয়ে ভাবাচ্ছে। আশঙ্কা অপেশাদারী লোকের অনুপ্রবেশে শেষ পর্যন্ত জ্যোতিষী ব্যবসা কিংবা চিটফান্ডের মতো ঘটনা এই শিল্পে ঘটে না বসে। যাদের হয়তো বা একমাত্র উদ্দেশ্য ই থাকবে, মানুষকে ধমকিয়ে চমকিয়ে সমস্ত নীতি আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে কিছু অসাধূ প্রকৃতির রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের খুশি করা সহ পদলেহনের মতো ঘটনার মধ্য দিয়ে পবিত্র সাংবাদিকতা পেশাকে কালিমালিপ্ত করা।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, সমাজের সিংহভাগ মানুষ ই চায় আত্মপ্রচার, নিজেকে তুলে ধরতে সদা সর্বদা ব্যাস্ত এই মনুষ্য সমাজের বিশেষ কিছু অংশ। রাজনীতিতেও এই এক ই ঘটনার ব্যাতিক্রম হয় কিভাবে? ফলে প্রচারের আলোকে আসতে চাওয়া সমাজের এই দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণী কিংবা পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী কে ‘খাবার’ হিসাবে ব্যবহার করে এই অশুভ উদ্দেশ্য চরিতার্থের লক্ষে নেমেছে এক শ্রেণীর অসাধূ ব্যাবসায়ী। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে লকডাউন পরিস্থিতি বলবৎ থাকায় সমাজের একটি বিরাট অংশ কর্মহীন। ফলে অনেকেই চাইছে, ছলে বলে কৌশলে যে কোন একটি অবলম্বনকে সামনে রেখে এগিয়ে চলতে। সমাজের চিত্রাকারশক,উচ্চ আকর্ষণীয় বিষয় এখন এই সোশ্যাল মিডিয়া,তাই এই বিষয়টিকেই হাতিয়ায় করে কেরিয়ার গঠনের স্বপ্ন দেখছে অনেকে। বিষয়টি কে কেরিয়ার হিসাবে গ্ৰহন করে, সেই ভাবে নিজেকে তৈরি করে এগোতে পারলে, ভাবনাটি সত্যিই প্রশংসনীয়। সমাজ তাদেরকে অবশ্যই সাধূবাদ জানাবে কিন্তু আশঙ্কা অন্য জায়গায়,নাড়ি কাটতে গিয়ে অন্য কিছু কেটে ফেলবে না তো? তাহলেই তো বিপত্তি! কারণ এদের অধিকাংশেরই কোনও প্রশিক্ষণ নেই।
এরা এই পেশায় এসেছে আবেগে। অতীতে হয়তো পাড়ায় কোনও অনুষ্ঠানে, মঞ্চে উঠে কোনও শিল্পী বা অতিথির ছবি তুলেছিল কিংবা দু-চার দিন হয়তো কোন প্রিন্ট কিংবা ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার কোনও জেলা কিংবা বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে সহযোগি হিসাবে কোন নেতা-নেত্রীর বাইট নেওয়া কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চে ছবি কিংবা ভিডিও করবার সময় ক্যামেরা অথবা বুম টা হাতে ধরেছিল, ব্যাস বিশেষজ্ঞের সাময়িক সংস্পর্শে নিজেকে হয়তো পারদর্শী ভাবতে শুরু করে দিয়েছে। ঘটনায় আশঙ্কা বাড়ছে, শেষ পর্যন্ত যেন এ রাজ্যের সাত দিনে নার্স তৈরি র মতো ঘটনা ঘটে না বসে, দুঃশ্চিন্তা সেখানেই। এতে সাংবাদিকতার গুনগতমান কমবে, মানুষ বিষয়টির উপর আস্থা ও আকর্ষণ হারাবে, বিঞ্জাপন দাতাগন প্রচারের মাধ্যম হিসাবে মিডিয়ার উপর বিনিয়োগ করতে অনিহা প্রকাশ করবে, ফলে নিশ্চিতভাবে অর্থনীতির অগ্ৰগতিতে এর কু প্রভাব পড়বেই। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে বিষয়টি কে একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার অধীন সহ সরকারের হস্তক্ষেপ জরুরী বলে মনে করেন সমাজের বুদ্ধিজীবী মহল।