
শরণানন্দ দাস, কলকাতা: গড়িয়ার শ্মশানে ১৩ টি বেওয়ারিশ মরদেহ দাহ করতে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। যে ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেছেন, ‘ শত্রুকেও এমন অসম্মান কেউ করেনা।’ বৃহস্পতিবার বিজেপি রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ গড়িয়ার শ্মশানে ১৩ টি মরদেহ কেন রাখা ছিল? যদি পরিচয় জানার প্রয়োজন হয় তাহলেতো মর্গে থাকবে, শ্মশানে কেন? কি রহস্যজনক কারণে এই মরদেহগুলি শ্মশানে লুকিয়ে রাখা হয়েছে? যে ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে তাতে মানুষের মধ্যে আত্মগ্লানি তৈরি হয়েছে। মৃতদেহের প্রতি সামান্য সম্মান আমরা দিতে পারি না?’
তিনি বলেন, ‘ আমরা দেখলাম মরদেহের গা থেকে চামড়া খসে খসে পড়ছে। কোভিডে আক্রান্তদের মরদেহ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। অন্তত মাসখানেকের পুরনো দেহ। সংখ্যা লুকোনোর চেষ্টা। আমি আগেই বলেছিলাম, নন্দীগ্রামে সিপিএম লাশ চুরি করেছিল আর তৃণমূল করোনার লাশ চুরি করছে। সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারায় বলা আছে মৃতদেহের প্রতি কেমন সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। তার ধারকাছ দিয়েও যায়নি।’
মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, ‘ আমি মুখ্যমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০১০ সালে পুলিশের সঙ্গে মাওবাদীদের লড়াইয়ে মৃত মাওবাদীদের দেহ বাঁশে করে ঝুলিয়ে আনা হয়েছিল। আর সেই ছবি দেখে মুখ্যমন্ত্রী বাংলা স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন। মানবাধিকারের দাবিতে আপনার, কিছু বুদ্ধিজীবীর প্রাণ কেঁদেছিল। আর আজ সম্পূর্ণ নিরপরাধ করোনায় মৃত মানুষগুলোর মরদেহকে এতটুকু সম্মান জানাতে পারলেন না। এই আপনার এগিয়ে বাংলা!’ তিনি বলেন, ‘ যতোটুকু খবর পাওয়া যাচ্ছে মরদেহগুলো অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। যাতে চিনতে না পারা যায়।তাই মাংস খসে খসে পড়ছে। এই ধরনের অমানবিক ব্যবহার বারবার ঘটছে। এতে সরকারের মানসিকতা প্রকাশ হয়ে পড়েছে। খুবই নিন্দাজনক ঘটনা, ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই।’
আরও পড়ুন: শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে মৃতদেহ সৎকার করা উচিত, স্বরাষ্ট্রসচিবের জবাব তলব রাজ্যপালের
এদিন বিজেপি কর্মী, নেতাদের বিরুদ্ধে ফের তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ করেন তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ করোনা সামলাতে না পেরে সেই হতাশায় বিজেপি কর্মীদের উপর ফের আক্রমণ চালাচ্ছে তৃণমূল। বনগাঁয়ে আমাদের শক্তি কেন্দ্রের একজন কর্মীকে নৃশংসভাবে মেরেছে তৃণমূলের গুণ্ডারা। মারা গিয়েছে ভেবে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় রেখে চলে যায়। আমাদের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে বারাসতের হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছে। মাথাভাঙ্গা, তুফানগঞ্জে আমাদের কর্মীদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়েছে, মহিলাদের উপরও আক্রমণ হয়েছে। কিন্তু পুলিশ দিয়ে, গুণ্ডা দিয়ে আমাদের নেতা, কর্মী, সাংসদদের আটকে বিজেপিকে থামানো যাবে না। মানুষ উল্টো গুনতি শুরু করে দিয়েছে।’