
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: উৎসবের মরশুম, শুরু হয়েছে গিয়েছে প্রস্তুতি। তার আগেই দেশের মানুষকে বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন। কেরলে ওনাম উৎসব পালনের জেরে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। রবিবার সানডে সংবাদ’ অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ কোনও ধর্ম বা ভগবান বলেনি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হইহই করে উত্সব করতে হবে। নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস প্রমাণ করার জন্য ভিড়ের প্রয়োজন নেই। কোনও ধর্ম বা ভগবান বলে না জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ধুমধাম করে উৎসব পালন করতে। তাই বাড়িতে বসে পরিবারের সঙ্গে উৎসব পালনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
হর্ষবর্ধন আরও বলেন, ‘ধর্মে বিশ্বাস রয়েছে সেটা দেখানোর জন্য একসঙ্গে অনেকে.মিলে বাইরে বেরিয়ে জমায়েত করার কোনও দরকার নেই। যদি আমরা সেটা করি তাহলে আরও বেশি নিজেদের বিপদ ডেকে আনব। ভগবান কৃষ্ণ বলেছেন নিজের লক্ষ্যে মনোনিবেশ কর। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এই ভাইরাসকে শেষ করে মানবতাকে বাঁচানো। এটাই আমাদের ধর্ম। এটাই গোটা বিশ্বের ধর্ম।’ তাঁর কথায়, ‘কঠিন পরিস্থিতিতে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কোনও ধর্ম বা ভগবান বলে না বাইরে বেরিয়ে জাঁকজমক করে উত্সব করতে হবে।’ এবছর ঘরে বসেই উত্সব পালন করার পরামর্শ দেন তিনি। বাংলায় বিধি মেনে দুর্গাপুজোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদানও দিচ্ছে সরকার। অন্যদিকে দিল্লি সরকার আবার পুজোরই অনুমতি দেয়নি। অন্যান্য রাজ্যেও কড়া বিধি আরোপ করা হয়েছে।
আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এই ভাইরাসকে শেষ করে মানবতাকে বাঁচানো। এটাই আমাদের ধর্ম। এটাই গোটা বিশ্বের ধর্ম।” সামনেই দুর্গা পুজো, দশেরা, ছট পুজো, দিওয়ালি। পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যে পুজোর কেনাকাটার ভিড় শুরু হয়েছে। দিওয়ালির আগে একই দৃশ্য দেখা যেতে পারে দিল্লি-সহ উত্তর ভারতে।
আরও পড়ুন: সিএএ লাগু কবে! একুশ আসন্ন, নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন মতুয়াদের
ওনামের পর কেরলের সংক্রমণ বৃদ্ধির দিকে ইঙ্গিত করে হর্ষ বর্ধন বলেন, “কঠিন পরিস্থিতিতে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কোনও ধর্ম বা ভগবান বলে না বাইরে বেরিয়ে জাঁকজমক করে উৎসব করতে হবে। বড় বড় প্যান্ডেলে গিয়ে পুজো দিতে হবে। যদি আপনি জানেন বাইরে আগুন জ্বলছে এবং তা সত্ত্বেও ধর্মের নামে সেই আগুনে ঝাঁপ দেন, সেই উৎসবের সার্থকতা কোথায়? বাড়িতে বসেও প্রার্থনা করা যায়। উৎসব পালন করতে গিয়ে যদি আমরা সুরক্ষাবিধি উপেক্ষা করি, দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়ংকর হতে পারে। তা আমাদেরই বিরাট সমস্যায় ফেলে দেবে।” কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে হর্ষ বর্ধন জানান, কেন্দ্র অনেকগুলি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। সবাইকে ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়ার দিকেই নজর দিচ্ছে সরকার। অগ্রাধিকারও ঠিক করা হচ্ছে সব বিষয় মাথায় রেখে। ইতিমধ্যেই একাধিক গবেষণা বলছে, শীতের সময়ে করোনা সংক্রমণের বিস্ফোরণ হতে পারে। ব্রিটেনের উদাহরণ টেনেই সে কথা বলছেন গবেষকরা। পরিস্থিতি যখন এমনই গুরুতর তখন সাধারণ মানুষের উদ্দেশে উত্সবের দিনগুলিতে বাইরে না বেরনোর পরামর্শ দিলেন হর্ষ বর্ধন।