কোভিডে মৃত্যু হল বর্ধমান থানার এক পুলিশ কনস্টেবলের

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান : প্রতিদিনই পূর্ব বর্ধমান জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২২০০ ছাড়িয়েছে ।
মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের । সাধারণ মানুষের পাশাপাশি জেলার পুলিশ কর্মী মহলেও থাবা বসিয়েছে করোনা । এবার কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল জেলার এক পুলিশ কর্মীর ।এই ঘটনার রীতিমতো উদ্বিগ্ন জেলা পুলিশের শীর্ষ মহল ।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , কোভিডে মৃত বছর ৫৫ বয়সী ওই পুলিশকর্মী বর্ধমান থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন।তাঁর বাড়ি বীরভূম জেলার সিউড়িতে। পাঁচ দিন আগে তিনি শেষ ডিঊটি করেন ।তারপর তিনি নিউমোনিয়ায় ও জ্বরে আক্রান্ত হন।কোভিড টেস্টের জন্য তিনদিন আগে তাঁর নমুনা নেওয়া হয় । তারপর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কনস্টেবল তাকে বাড়ি যাবার অনুমতি দেয়। সিউড়ীর বাড়িতে গিয়ে ওই পুলিশকর্মী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন । বুধবার রাতে তাঁকে সিউড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় ।
এদিন ওই পুলিশ কর্মীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে । তার পরেই নড়ে চড়ে বসেন জেলা পুলিশের কর্তারা । কোভিড আক্রান্ত পুলিশ কর্মীর সংস্পর্শে আসা থানার ২২ জন পুলিশ কর্মীর লালা রসের নমুনা এদিনই সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দপ্তরের লোকজন । জীবানু মুক্ত করা হয় বর্ধমান থানা ।
জেলায় এই প্রথম কোন পুলিশ কর্মী করোনা আক্রান্ত হলেন এমনটা নয় । ইতিপূর্বে জেলা পুলিশের দুই শীর্ষ আধিকারিক ,পুলিশ সুপারের নিরাপত্তারক্ষী এবং মাধবডিহি ও খণ্ডঘোষ থানার অফিসার ইনচার্য করোনা আক্রান্ত হন । চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে তারা কাজে যোগ দেন । কয়েকদিন আগে ফের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে খণ্ডঘোষ থানার অফিসার ইনচার্যের । দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে চিকিৎসার জন্য কলকাতার হাসপাপালে পাঠানো হয় । অফিসার ইনচার্য ছাড়াও খণ্ডঘোষ থানার আরও ৩০ জন পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে । তারফলে তালা পড়ে যায় খণ্ডঘোষ থানায় । থানার অদূরে একটি অনুষ্ঠান বাড়ি ভাড়া নিয়ে পুলিশ আধিকারিকরা এখন সেখানে প্রসাসনিক কাজকর্ম চালচ্ছেন । তারই মধ্যে এই প্রথম কোভিড আক্রান্ত হয়ে জেলা পুলিশের এক কর্মীর মৃত্যু হল ।
এদিকে কোভিড আক্রান্ত হয়ে বর্ধমান থানার
পুলিশ কর্মীর মৃত্যুর পরেই শাস্তির কোপে পড়েছেন বর্ধমান থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কনস্টেবল অরবিন্দ দে । পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘দায়িত্বে গাফিলতির কারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কনস্টেবল অরবিন্দ দেকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। ’
কারণ হিসাবে জানা গিয়েছে, কোভিডে মৃত কনস্টেবল নিউমোনিয়া ও জ্বরে ভুগছিলেন বলে তিন দিন আগে তাঁর কোভিড টেস্ট করা হয়।ওই কনস্টেবলের কোভিড টেস্ট হওয়ার বিষয়টি অরবিন্দ দে শীর্ষ কর্তাদের জানাননি । ওল্টে উপসর্গ থাকা স্বত্বেও ওই কনস্টেবলকে সিউড়ীর বাড়িতে যেতে দেন ।এই গাফিলতির জন্যই দায়িত্বপ্রাপ্ত কনস্টেবল অরবিন্দ দেকে শাস্তির কোপে পড়তে হয়েছে ।