রাম বিরোধীরা দেশদ্রোহী! তোপ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের

রক্তিম দাশ, কলকাতা: রামমন্দিরের শিলান্যাসের বিপক্ষে যাঁরা, তাঁরা রাষ্ট্রবিরোধী বলে দাবি করল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ(ভিএইচপি)। হিন্দুত্ববাদী এই সংগঠনের কথায়, রাম মন্দির নির্মাণ দেশের স্বাভিমানের প্রতীক।
অযোধ্যার রামমন্দিরে শিলান্যাস ঘিরে যে বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে সেই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। বৃহস্পতিবার নাগপুরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মিলিন্দ পরান্দে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন,‘ যাঁরা আগামী ৫ আগস্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাসের বিরোধিতা করছেন তাঁরা রাষ্ট্রবিরোধী এবং ভারতীয় হিন্দু সমাজের বিরুদ্ধাচারণ করছেন।’
এদিন মিলিন্দ পরান্দে বলেন, ‘সারা দেশের হাজার হাজার পবিত্র নদী এবং তীর্থস্থান এবং মন্দিরগুলি থেকে অযোধ্যাতে নিয়ে আসা জল এবং মাটি সমগ্র ভারতের একতার স্বরূপ হিসাবে গণ্য হবে এবং দেশবাসীকে সর্বদা আপোষহীন সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ, অবিচ্ছেদ্য মানবতাবাদ, জাতীয় ঐক্য , জাতির আঞ্চলিক অখ-তা বজায় রাখতে প্রেরণা ও দিক নির্দেশ দেবে।
আরও পড়ুন:সাত সাগরের জল বোতলবন্দি করে রেড ইন্ডিয়ানদের স্মৃতিতে বুঁদ বৃদ্ধ নাবিক
তিনি আরও বলেন,‘১৯৮৯ সালে এক তফশিলি যুবক কামেশ্বর চৌপালের হাতে শ্রদ্ধেয় সন্তদের উপস্থিতিতে শ্রী রাম জন্মভূমির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল, যিনি আজ শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের অন্যতম ট্রাস্টিও হয়েছেন। সামাজিক সম্প্রীতির অসামান্য উদাহরণ।’
রামমন্দির নির্মাণ শুরু দিনক্ষণ নিয়ে কয়েকজন জ্যোতিষী এবং সন্তদের পক্ষ থেকে ভিন্নমত পোষণ করা হয়েছে। তা নিয়ে বলতে গিয়ে মিলিন্দ পরান্দে বলেন,‘ এটা ঠিক। কয়েকজন এই দিনক্ষণের বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করলেও অধিকাংশ সন্ত এবং জ্যোতিষীরা এই দিনটির পক্ষেই মত দিয়েছেন। আগামী ৫ আগস্ট সাধু-সন্তরা এই অনুষ্ঠানের জন্য অযোধ্যা পৌঁছাবেন। প্রধামন্ত্রী মোদি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের স্বরসংঘ চালক মোহন ভাগবতজীও উপস্থিত থাকবেন শিলান্যাস স্থলে। প্রধানমন্ত্রী মোদি দেড়ঘণ্টা থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত সচিব হচ্ছেন আইএএস হার্দিক সতীশচন্দ্র শাহ
শিলান্যাস অনুষ্ঠানে উপস্থিতির সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত থাকবে বলে জানিয়েছেন ভিএইচপি সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন,‘ কতজন উপস্থিত থাকবে তার তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে। কারা থাকছেন তা জানাবে শ্রীরাম জন্মভূমি ট্রাস্ট। যাঁরা আসতে পারবেন না তাঁদের বার্তা অবশ্যই আসবে। বিশ্বের নানা দেশ সহ এদেশেও টিভিতে এই অনুষ্ঠান সরাসরি দেখবেন রামভক্তরা।
ওই দিনটিকে অযোধ্যার দিকে মুখ করে চলবে পুজো-পাঠ।’
ভিএইচপি প্রাক্তন সভাপতি প্রবীন তোঘারিয়াকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে মিলিন্দ পরান্দে বলেন,‘ উনি এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন প্রথম থেকে। কিন্তু আমরা ভিএইচপি-ও পক্ষ থেকে কাউকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি না। আমন্ত্রণ জানানোর কাজটি করছে ট্রাস্ট। তাঁরা এবিষয়ে বলতে পারবেন।’
করোনা আবহের কারণে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান উদ্ধব থ্যাকারে অনলাইনে অনুষ্ঠান করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। তা নিয়ে মিলিন্দ পরান্দে বলেন,‘ ওঁনার মত উনি দিয়েছেন। সবাই মত দিতে পারেন। কিন্তু অনুষ্ঠান নির্ধারিত দিনে এবং সময়ে হচ্ছে। যে যা বলছে বলুক, কার্যক্রম হবেই।’
রামমন্দিরের শিলান্যাস ঘিরে যে বির্তক উঠেছে তাকে উড়িয়ে দিয়ে এদিন মিলিন্দ পরান্দে বলেন, ‘যাঁরা আসবেন না, কি করা যাবে? রামমন্দির নিয়ে বিরোধীরা ব্যবসা করতে চাইছে। তাঁরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রামমন্দির নির্মাণ শুরু হচ্ছে। যাঁরা সংবিধান হাতে নিয়ে শপথ নিয়েছেন তাঁরা এই কাজ কেন করছেন? এটা রাষ্ট্রবিরোধিতা নয়? রায়ের পরেও পিআইএল করতে গিয়ে কি হল? আদালত তা খারিজ করে দিল। এটা হিন্দুদের হিতে হচ্ছে,তার মানে এই রাষ্ট্রহিতের জন্য। এই মন্দির নির্মাণ কয়েক শতাব্দী ধরে আন্দোলনের জয়। এটা বাধা দেওয়া উচিত নয়। রামমন্দির নির্মাণ রাষ্ট্রীয় স্বভিমানের এবং একাত্বতার প্রতীক।’