
যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্ক: চলে গেলেন চিকিৎসক সংযুক্তা শ্যাম রায়। মাত্র ৪১ বছর বয়সেই জীবনে ছন্দপতন। রেখে গেলেন সাত বছরের কন্যাকে। আর বাঁচিয়ে গেলেন কিছু মানুষের জীবন। ১৯৯৯ সালে শিয়ালদা এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ডাক্তারি পাশ করেন সংযুক্তা। এনেসথেসিয়া নিয়ে এমডি করেন তিনি। বিশেষত ব্রেনের অস্ত্রোপচার করতে হলে এখানে অনেক প্রবীণ চিকিৎসকেরও এনেসথেসিয়া পিছিয়ে যান, সংযুক্তাদেবী ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। দীর্ঘ সাত বছর এই হাসপাতালে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করার পর তিনি ব্যক্তিগতভাবে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এসে কাজ শুরু করলেও সেখানেও তার কাজের খুঁত কেউ বার করতে পারেনি।
শুক্রবার রাজারহাট নিউটাউনে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয় সংযুক্তার। দ্রুত তাঁকে ইএম বাইপাসের পাশের অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে রবিবার রাতেই ব্রেন ডেথ হয় তাঁর। কিন্তু পরিবার থেমে থাকেনি। এক চিকিৎসকের পরিবারের মতোই কাজ করেছেন তারা। সংযুক্তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
এরপরই হাসপাতালের তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয় রোটো-র (রিজিওনাল অর্গান এন্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন ) এর সঙ্গে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা জানা যায়, ব্রেন ডেথ হয়ে যাওয়া সংযুক্তার লিভার, দুটি কিডনি এবং চোখ দান করার মতো পরিস্থিতিতে রয়েছে। এরপরই কোথায় কোথায় কার কোন অঙ্গ প্রয়োজন এবং তাঁর সঙ্গে ব্রেন ডেথ হয়ে যাওয়া সংযুক্তার অঙ্গের ম্যাচিং হচ্ছে কিনা সেটা খোঁজ শুরু করে রোটো। মঙ্গলবার রাতেই ম্যাচিং গ্রহীতা পাওয়া যায়। সংযুক্তার লিভার পেতে চলেছে কলকাতারই বাসিন্দা ৬১ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। অন্যদিকে একটি কিডনি পাবেন জামশেদপুরের বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সী এক তরুণী। এই কিডনি প্রতিস্থাপন হবে দমদম আইএলএস হাসপাতালে। অন্যদিকে আরও একটি কিডনি এসএসকেএম হাসপাতালে ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপিত করা হবে। চোখ বা কর্নিয়া যাবে দিশা আই হাসপাতালের আই ব্যাংকে।