‘লাদাখ সীমান্তে চিনা আগ্রাসন রুখে দেওয়া হয়েছে’, সংসদে জানালেন রাজনাথ সিং
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলবার সংসদে ভারত-চিন সংঘাত প্রসঙ্গে মুখ খোলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ভারত-চিন সীমান্ত জট এখনও কাটেনি। মঙ্গলবার সংসদে লাদাখ ইস্যুতে একথাই জানালেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এদিন, সংসদে রাজনাথ বলেন, চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রাজনাথ আরও জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ভঙ্গ করেছে চিন।এখনও পর্যন্ত দু’দেশের মধ্যে কোনও রফাসূত্র তৈরি হয়নি। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্য়মে যে নিয়ন্ত্রণরেখা তৈরি করা হয়েছে, তা মানতে চায় না চিন’।
এদিন, বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে ‘Developments on our borders in Ladakh’ শীর্ষক আলোচনায় ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘর্ষের বিষয়টি তুলে ধরেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সীমান্তে লালফৌজের হানা নিয়ে গোড়া থেকেই সরকারকে বিদ্ধ করে আসছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। বিশেষ করে মোদি সরকারের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এদিন সেই সমালোচনার জবাব দিলেন রাজনাথ। শুধু তাই নয়, সদনের নিম্নকক্ষে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি প্রস্তাবও পেশ করেন তিনি। এদিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লোকসভায় আরও জানান, লাদাখে প্রায় ৩৮ হাজার বর্গকিলোমিটার জমি দখল করেছে চিন। এছাড়া, ১৯৬৩ সালের চিন-পাকিস্তান সীমান্ত চুক্তির নামে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার জমি বেজিংয়ের হাতে তুলে দিয়েছে ইসলামাবাদ।
I request this house to pass a resolution that we stand shoulder to shoulder with our armed forces who are guarding our borders to safeguard India’s sovereignty and integrity: Defence Minister Rajnath Singh https://t.co/UbxT1dYLr8
— ANI (@ANI) September 15, 2020
রাজনাথ সিং বলেন, “মে মাসের শুরুর দিক থেকেই প্যাংগং লেক, গালওয়ান উপত্যকা, গোগরা এবং কালা টপ অর্থাত্ পূর্ব লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রচুর পরিমাণে সেনা মজুত শুরু করে চিন। অবশেষে ১৫ জুন আক্রমণ চালায় লাল ফৌজ। এরপর থেকে একাধিকবার দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠক এবং আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছিল। কিন্তু সেই সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়নি এখনও। পূর্ব নির্ধারিত এলএসি নিয়ে চিনের বিরোধিতার জন্যই বিতর্কের সূত্রপাত।”
রাজনাথ সিং আরও বলেন, “আইনের তোয়াক্কা না করে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ৫,১৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকা পাকিস্তান চিনের হাতে তুলে দিয়েছে ভারতের বদলে। এছাড়া ইতিমধ্যেই লাদাখের ৩৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় অনৈতিকভাবে দখল নিয়েছে চিন। যে বিষয়টি সম্পর্কে সংসদে অবস্থিত সকলেই অবগত রয়েছেন।”
আরও পড়ুন: ‘অভিষেক ঝুলে পড়লে আর শ্বেতাকে মলেস্ট করা হলে?’ জয়াকে কড়া আক্রমণ কঙ্গনার
গালওয়ান এবং প্যাংগং লেকের উত্তেজনার পর কেন্দ্রের কাছে একাধিকবার এই দাবি জানিয়েছে বিরোধী দল। এবার সেই নিয়েই লোকসভায় সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং । লাদাখ সীমান্তের সমাধানসূত্র মেলেনি এখনও। দ্বিপাক্ষিক চুক্তির উপর নির্ভর করে যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অর্থাত্ এলএসি নির্ধারিত হয়েছে, তা মানতে চাইছে না চিন। অর্থাত্ দু’তরফে এখনও কোনও সমাধানের ইঙ্গিত মেলেনি। তবে বেজিংকে যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারতীয় জওয়ানরা। দেশবাসীর উচিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ানো।
রাজনাথ সিং বলেন, ”শান্তি রক্ষা অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে লাদাখে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য আমরা তৈরি রয়েছি। সেখানে মোতায়েন সেনা-জওয়ানদের সাহস ও উত্সাহ অপরিসীম। দেশের ১৩০ কোটি মানুষ তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁদের জন্য টেন্ট, গোলাবারুদ, অস্ত্র সবই পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে।” এদিন রাজ্যসভায় সেনাবাহিনীর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করেছেন রাজনাথ সিং। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকেই প্যাংগং হ্রদের উত্তরে আগ্রাসী ভূমিকা চিনের।