ভাঙড়ে আব্বাসের সমর্থনে একই মঞ্চে পীরজাদা মেহেরাব সিদ্দিকী

ফিরোজ আহমেদ, ভাঙড়: দিন যত এগিয়ে আসছে বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে সরগরম হচ্ছে ভাঙড়ের রাজনীতি। ইতিমধ্যে ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। এদিন ভাঙড়ের নারায়ণপুরে ভরা সভা থেকে ঘোষণা করেন, “ভাঙড়ে ৭০ শতাংশ মুসলিম ভোট আছে এর পাশাপাশি ক্যা নিং এ ৭২ শতাংশ মুসলিম ভোট ব্যা ঙ্ক আছে এই দুই বিধানসভায় আমরা প্রার্থী দেব এবং আমাদের প্রার্থী জয়ী হবে। বাংলায় তৃণমূল-বিজেপি নয় তৃতীয় ফ্রন্ট ক্ষমতায় আসবে।”
আব্বাসের কথার রেষ ধরে পীরজাদা মেহেরাব সিদ্দিকীও ঘোষণা দেন যে, “বাংলায় নতুন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসছে।”
এবার ভাঙড়ে শাসক দলের চোখে চোখ রেখে ভোটের লড়াইতে ময়দানে নেমেছে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। এখনও তিনি তার রাজনৈতিক দল ঘোষণা করেননি। কিন্তু ইসলামিক জলসার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন যায়গায় সভা সমাবেশ করে জনসমর্থন বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছেন। শনিবার ভাঙড়ের নারায়ণপুরে একটি ইসলামিক জলসায় উপস্থিত হন তিনি। ভরা সভায় ধর্মীয় বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি তিনি কেন রাজনীতিতে আসছেন তার ব্যাখ্যা দেন।
আব্বাসের পাশাপাশি এদিন একই মঞ্চ থেকে পীরজাদা মেহেরাব সিদ্দিকীও ধর্মীয় বক্তব্য দেওয়ার পাশাপাশি অল্প বিস্তার রাজনৈতিক বক্তব্য দেন। তিনি আব্বাসের নীতি-নৈতিকতাকে সমর্থন করে বলেন, “পিছিয়ে পড়া মানুষদের দাবি দাওয়া নিয়ে আব্বাস যে ভাবে লড়াই করছে তাতে আমি তার পাশে আছি। স্বাধীনতার পর থেকে মুসলিমরা যে তিমিরে ছিল আজও সেই তিমিরে আছে।” তিনি হুংকার দিয়ে বলেন, “আব্বাস কেন যে কোনও ভাইয়ের উপরে আক্রমণ হলে আমি ঝাঁপিয়ে পড়ব। আমি সহ্য করব না।” পীরজাদা মেহেরাব সিদ্দিকীর এই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্যের ফলে শঙ্কিত শাসকদলের নেতৃত্ব। কেন না রাজনৈতিক ময়দান হোক বা এমনিতেই আব্বাস সিদ্দিকীর উপরে আক্রমণ হলে মেহেরাব সিদ্দিকী ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন, তাতে মুসলিম ভোট ব্যা ঙ্কে আরও ধস নামতে পারে তা বলাই বাহুল্যর।
এদিন ভাঙড়ের ধর্মীয় জলসা থেকে আব্বাস সিদ্দিকী বলেন, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দলিত, আদিবাসী, মতুয়া ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে একটা ফ্রন্ট তৈরি করেছি। ৭৩ বছর ধরে সেকুলারের নামে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। মাত্র ১৫ শতাংশ লোক সারাদেশের উপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে। বাংলার গণতন্ত্র বাঁচাতে তাই আমরা তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেসকে জোটে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। এদিন আব্বাস আরও জানান, ‘মুসলিম, আদিবাসী দলিত সহ পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য রাজ ক্ষমতা দরকার তাই আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে জয় যুক্ত করুন’। তিনি আরও জানান, ‘এবার রাজ্যের তৃণমূল বিজেপি নয় তৃতীয় ফ্রন্ট ক্ষমতায় আসবে।
আরও পড়ুন: বুথ যার, ক্ষমতা তার! একুশের গেমপ্ল্যান বিজেপির
দুই ধর্ম গুরু আব্বাস এবং মেহেরাব সিদ্দিকী ভাঙড়ে এই প্রথম একাই সভায় দাঁড়িয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণ এবং হুংকার দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙড় বিধানসভা ছিনিয়ে নেওয়ার বার্তা দিতেই উজ্জীবিত আব্বাস সিদ্দিকীর আহলে সুন্নাতল জামাতের কর্মীরা। এখন দেখার রাজনীতির ময়দানে পীরজাদা কতটা সফল হন। যদিও তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ভাঙড় ক্যা নিং ভোট যুদ্ধের কয়েক মাস আগে থেকেই সরগরম তা বলাইবাহুল্যম’।