টবে কাগজি লেবু রোপণ ও পরিচর্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি: খাবারে স্বাদ বাড়াতে, মুখে রুচি আনতে, রোগা হতে, নজর থেকে বাঁচাতে এমনকী সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও তার জুরি মেলা ভার। বাজারে তার ক্রয়মূল্য ৪টে ১০ কিংবা ৫ টা ১০। আকৃতিতে বড় হলে ৩ টে ১০ ও হয়। বাজারে তার ভিন্নজাতেরই চাহিদা রয়েছে। খাবারের পাতে নুনের সঙ্গে যার অবস্থান সর্বপ্রথম সেই লেবুকে অনেকেই বাড়িতে টবে চাষ করেন। কেমন ভাবে টবে কাগজি লেবুর চাষ করবেন, রইল সেই বিবরণ।
প্রথমেই বলি যে কোনও ফল চাষের জন্য একটু বড় টব নেবেন। প্রায় ১৪ ইঞ্চি। লেবুগাছ রোপণ করবেন যে টবে তাতে আরেকটি হোল বা গর্ত করে নেবেন। গাছ রোপণের আগে ওই গর্ত একটি খোলামখুচি দিয়ে বন্ধ করে দেবেন। তারপর ওই খোলামখুচির ওপরে নুড়ি-পাথর কিংবা ছোট স্টোনচিপস দিয়ে মোটা বালি দিয়ে চেপে দেবেন। এতে টবের জলনিকাশী ব্যবস্থা সঠিক থাকে। অবশ্যই এই বেডের ওপর দিতে হবে লেবুগাছের জন্য মাটি।
আরও পড়ুন: সবেদার ফলন পদ্ধতি…
তবে মাটি দেওয়ার আগে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। লেবুগাছের মাটি তৈরিতে লাগবে এক ভাগ গার্ডেন সয়েল, একভাগ কোকোপিট, একভাগ ভার্মিকম্পোস্ট, একভাগ নদীর বালিমাটি, দু’মুঠো সরষের খোল, এক চামচ হাড়গুড়ো এবং এক চামচ পটাশ। এই সব উপকরণ একত্রে মিশিয়ে যে টবে গাছ বসাবেন তাতে একমাস রেখে দিতে হবে।
এক মাস পর টব থেকে মাটি শুকনো খোলা জায়গায় রেখে মাটির আদ্রতাকে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর টবে বেড তৈরি করে তারওপর মাটি দিতে হবে। বেশ খানিকটা মাটি দিযে লেবুগাছের চারাটি বসাতে হবে এবং বাকি মাটি দিয়ে চেপে দিতে হবে। মনে রাখবেন টবের ওপরে ইঞ্চি মতন জায়গা ফাঁকা রাখবেন। মাটি দেওয়া সম্পূর্ণ হলে তারপর জল দিতে হবে।
লেবুগাছকে পূর্ণ সূর্যালোকে রাখা জরুরি। লেবুগাছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ফুল ও ফল পেতে সূর্যে আলো প্রয়োজন লেবুগাছ জল পছন্দ করে, তবে খেয়াল রাখতে হবে মাটি যেন চপচপে ভিজে না থাকে। তাহলে গাছের সকল ফুল ঝরে যাবে। শুধু চপচপে ভেজা নয়, মাটি শুকিয়ে গেলেও ফুল পড়ে যায়। জলের পাশাপাশি লেবুগাছের দরকার হয় খাবারও।
বাজারে অনেক সময় রসহীন লেবু পাওয়া যায়। এর কারণ ওই লেবুগাছে ফসফেট ও পটাশের অভাব। তাই লেবুগাছের সারে পটাশ এবং ফসফেটের পরিমাণ সঠিক হতে হবে। লেবুগাছে আপনি প্রতি মাসে সার দিতে পারেন, আবার বছরে তিনবারও (মার্চ/ আগস্ট/ অক্টোবর) দিতে পারেন।
বছরে তিনবার দিলে আপনাকে মুঠো খোল, চামচ হাড়গুড়ো ১ চামচ পটাশ নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে তিন চামচ নিয়ে গাছের গোড়ায় দিতে হবে। আর যদি প্রতি মাসে দেন তাহলে হাফ চামচ ডিএপি, হাফ চামচ পটাশ, ১ চামচ ফসফেট ও ১ চামচ সরষের খোল ভালো করে মিশিয়ে চামচ গেছের গোড়ায় দিতে হবে। সার দেওয়ার আগে মাটিটা ভালো করে খুড়ে নিতে হবে। এছাড়া লেবুগাছে পাতাঝরা, পাতা কুঁকড়ে যাওয়া, কাণ্ড ফুটো হয়ে যাওয়া প্রভৃতি রোগ দেখা যায়। সেক্ষেত্রে রোগটপ্লাস এক লিটার জলে ২০ ফোঁটা দিযে ১৫ দিন অন্তর ৩-৪ বার দিলে রোগ-পোকার হাত থেকে গাছকে রক্ষা করতে পারেন।