
যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্কঃ গোটা বিশ্বের সামনে আসতে চলেছে সন্ত রামানুচার্যের ২১৬ ফুটের বিশালাকার মূর্তি। যা “স্ট্যাচু অব ইক্যুয়ালিটি” নামে পরিচিত থাকবে। স্ট্যাচু অব ইকুয়্যালিটি গোটা বিশ্বে আধ্যাত্মিকতা, সমতা এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বার্তা দেবে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি যজ্ঞের মাধ্যমে এই শুভ অনুষ্ঠানের সূচনা করা হবে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ও চিন্না জিয়া স্বামীর উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই মূর্তির উদ্বোধন করবেন। উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনি আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ত রামানুচার্যের ১২০ কেজি সোনার মূর্তির উন্মোচন করবেন।
হায়দরাবাদের কাছে সামশাবাদে ৪৫ একর জমির উপর ত্রিদন্ডী চিন্না জিয়ার স্বামী যে মন্দির স্থাপন করেছেন, সেখানেই এই মূর্তি স্থাপিত করা হয়েছে। এটিই বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম মূর্তি হতে চলেছে। বিশ্বজুড়ে সাম্যের বা’র্তা দে’বে Statue of Equality, রামানুচার্যের ১০০০ তম জন্মবার্ষিকীতে বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য।
তেলঙ্গনার সামশাবাদে ৪৫ একর জমির উপর এই বিশালাকার মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। এখানে প্রবেশের মূল চারটি ফটক থাকবে এবং একসঙ্গে প্রায় ৩ হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রবেশদ্বারের নকশা তেলেঙ্গানার বিখ্যাত ‘কাগাদিয়া’ শৈলীর অনুকরণে নির্মিত হয়েছে। প্রধান প্রবেশদ্বারেই ১৮ ফুট উচ্চতার হনুমান ও গড়ুঢ়ের মূর্তিও স্থাপন করা হবে।
সামশাবাদের এই প্রাঙ্গণের প্রধান আকর্ষণ ২১১৬ ফুট উচ্চতার শ্রী রামানুচার্য স্বামীর মূর্তি। পদ্মফুলের উপর উপবিষ্ট অবস্থায় রামানুচার্যের মূর্তিটি পঞ্চধাতু দিয়ে নির্মিত। এছাড়াও ৪২ ফুট উচ্চতার তামার তৈরি একটি মিউজিকাল ঝর্ণাও স্থাপন করা হয়েছে। ভিতরে ৫৪ ইঞ্চি উচ্চতার ১২০ কেজি সোনার তৈরি শ্রী রামানুচার্যের অপর একটি মূর্তিও স্থাপিত থাকবে। ১২০ কেজির যে স্বর্ণমূর্তিটি মন্দিরের গর্ভগৃহে স্থাপিত থাকবে, তা সন্ত রামানুচার্যের জীবনের ১২০ বছরকেই সম্মান জানাবে।
কে এই সন্ত রামানুজ
রামানুজ (১০১৭-১১৩৭) ছিলেন একজন ধর্মতাত্ত্বিক ও দার্শনিক। তিনি শ্রী রামানুচার্য, উপাধ্যায়, লক্ষ্মণ মুনি নামেও পরিচিত। সাধারণভাবে হিন্দুরা তাকে হিন্দু দর্শনের বিশিষ্টাদ্বৈত বেদান্তের প্রধান ব্যাখ্যাদানকারী হিসেবে দেখে থাকেন।
বৈষ্ণব আচার্য রামানুজাচার্যের শিষ্য রামানন্দ। যার শিষ্য ছিলেন কবির ও সুরদাস। রামানুজ বেদান্ত দর্শনের উপর ভিত্তি করে তাঁর নতুন দর্শন বিশিষ্টাদ্বৈত বেদান্ত রচনা করেছিলেন। বেদান্ত ছাড়াও রামানুজাচার্য সপ্তম-দশম শতকের মরমী ও ভক্ত আলওয়ার সাধুদের ভক্তি দর্শনের এবং দক্ষিণের পঞ্চরাত্র ঐতিহ্যের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন।
রামানুজ ১০১৭ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটবেলায় তিনি তাঁর গুরু যাদব প্রকাশের কাছ থেকে বেদ শেখার জন্য কাঞ্চী গিয়েছিলেন। রামানুজাচার্য ছিলেন আলওয়ার সন্ত যমুনাচার্যের প্রধান শিষ্য। গুরুর ইচ্ছানুসারে রামানুজ তিনটি বিশেষ কাজ করার অঙ্গীকার করেছিলেন । তিনি ব্রহ্মসূত্র, বিষ্ণু সহস্রনাম এবং দিব্য প্রবন্ধধামের ভাষ্য রচনা করেছিলেন। তিনি গৃহ ত্যাগ করেন এবং শ্রীরঙ্গমের জ্যোতিরাজ নামে এক সন্ন্যাসীর কাছ থেকে দীক্ষা নেন।
রামানুজাচার্যের দর্শনে শক্তি বা ঈশ্বরের সাথে তিনটি স্তর বিবেচনা করা হয়েছে, ব্রহ্ম অর্থাৎ ঈশ্বর, চিত অর্থাৎ আত্মা এবং প্রাকৃত অর্থাৎ প্রকৃতি