টুইটারে অস্ট্রেলিয়ার ভুয়ো ছবি পোস্ট, ক্ষোভ সত্বেও ক্ষমা চাইতে নারাজ চিন

ক্যানবেরা: কে দোষী, কে নির্দোষী – এই বিবাদে আবারও জড়িয়েছে চিন ও অস্ট্রেলিয়া। সম্প্রতি চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান টুইটারে একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, একটি আফগান শিশুকে হত্যা করছে একজন অস্ট্রেলীয় সেনা। এই ছবিটি সামনে আসার পরেই ক্ষেপে ওঠেন অজি প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে ছবিটিকে তিনি ‘ভুয়ো’ বলে দাবি করেছেন। একইসঙ্গে এই ভুয়ো পোস্টের জন্য চিনকে সরাসরি ক্ষমা চাইতে বলেন। যা ঘিরে দু-দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে।
চাঁচাছোলা ভাষায় এদিন অজি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি খুবই জঘন্য কাজ। কোনওভাবে এর পক্ষে যুক্তি দেওয়া উচিত নয়। চিন সরকারের লজ্জা হওয়া উচিত। ওঁরাই বিশ্বের নজরে ছোট হয়ে গেল।’ এরপরে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী (এডিএফ)’র সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনকে সামনে রেখে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র টুইটারে লিখেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সরকারের উলটে লজ্জা হওয়া উচিত কারণ, তাঁদের সেনারাই আফগানিস্তানে নিরীহ মানুষজনকে মেরেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের জবাবদিহির দাবি করি।’
যেখানে ১৯ ডিসেম্বর, অস্ট্রেলিয় সেনার শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছিলেন, আফগানিস্তানে বেআইনিভাবে সাধারণ বাসিন্দাদের মারার অভিযোগে তাঁদের বিশেষ বাহিনীর ১৩ জন সেনা জওয়ানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এডিএফ বাহিনীর বর্তমান ও প্রাক্তন ১৯ সদস্যের বিরুদ্ধে এসব হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যারা ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে নিরস্ত্র বন্দি, কৃষক বা বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছিল বলে তদন্ত কমিটি প্রমাণ পেয়েছে। এই তদন্তের নেতৃত্ব দিয়েছেন মেজর জেনারেল পল ব্রেরেটন। ওই তদন্ত কমিটি ৪০০ জনের বেশি প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে সাক্ষাতকার গ্রহণ করার পরেই এই প্রমাণ মেলে। এই নিয়েই গত কয়েকদিন সরব হয়েছে চিন। সেই প্রসঙ্গেই ওই ছবিটি টুইট করেন চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান।
তবে, চিন-অস্ট্রেলিয়ার মাঝে চাপানউতোর নতুন নয়। মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপ কিভাবে শুরু হলো, তা নিয়ে অনুসন্ধানের আহ্বানে অস্ট্রেলিয়া নেতৃত্ব দেওয়ার এবং অস্ট্রেলিয়ার বিষয়ে চিনের নাক গলানোর অভিযোগ নিয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। এছাড়া, সাম্প্রতিক কয়েক মাসে চিন বেশ কয়েকটি বাণিজ্য বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে যা অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির জন্য বড় রকমের ধাক্কা হিসাবে দেখা হচ্ছে। যেগুলির মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ওয়াইন, বার্লি এবং গরুর মাংসসহ প্রায় ১২টি পণ্য চিনে আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ এবং কিছু পণ্যের আমদানি বন্ধ করে দেওয়া।