
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লকডাউন এর সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন করোনার প্রতিরোধের একমাত্র উপায় শরীরের ইমিউনিটি বাড়ানো। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের ইমিউনিটি বাড়াতে প্রকাশ্যে ডিম ভাত খাওয়ার নিদান দিয়েছিলেন।
কিন্তু এবার সাধারণ মানুষের সেই ডিম ভাত আকাশ ছোঁয়া হয়ে উঠেছে। যে ভাবে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডিমের দাম। তাতে মাথায় হাত সাধারণ মানুষের।
ফের বাড়ল ডিমের দাম। যার ফলে ফের নাভিশ্বাস উঠছে মধ্যবিত্তের হেঁশেলে। ক্রমশ বাড়তে বাড়তে কলকাতায় এখন একটা ডিমের দাম ৭ টাকা! ক’মাস আগেও যা ছিল ৫ টাকা। স্বাভাবিক ভাবেই ‘সস্তা প্রোটিনে’র দাম হুহু করে বেড়ে চলায় সংকটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
ক’মাস আগেও প্রতি জোড়া ডিমের দাম ছিল ১০ টাকা। এখন একটা ডিমের দামই তা ছুঁয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। এমনকী ব্র্যান্ডেড ডিমের দামও বেড়ে ১০-১২.৫০ টাকা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে তা হলে দাম কী এ ভাবে বাড়তেই থাকবে?
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, একাধিক কারণে বাজারে ডিমের দামে আগুন লেগেছে। করোনাভাইরাস লকডাউনে এমনিতেই মার খেয়েছিল হ্য়াচারিগুলি। চাহিদা তলানিতে গিয়ে ঠেকে। তার উপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় গুজব ছড়িয়ে যায়, মুরগি ভাইরাসের বাহক। যে কারণে চরম লোকসানের মুখোমুখি হতে হয় হ্যাচারিগুলোকে।
এখন বাজারে চাহিদা ফিরলেও জোগানে কিছুটা টান, লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার সাময়িক সুযোগ এবং মাঝপথে ফড়েদের ভূমিকাকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।
হ্যাচারিগুলির অভিযোগ, খুচরো বাজারে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ফড়েরা ব্যাপক আকারে লাভবান হচ্ছে। উৎপাদনকারীরা যেখানে ডিম পিছু ৫.১০ টাকায় পাইকারি দরে ডিম বিক্রি করছেন, সেখানে ক্রেতার হাতে তা পৌঁছোচ্ছে ৭ টাকায়। পরিবহণের জন্য ডিম পিছু ১০ পয়সা খরচ হলেও অতিরিক্ত ১.৮০ টাকা দাম বেড়ে যাচ্ছে।
তবে আশার আলো দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশ বলছে, উৎসবের পর ডিমের দাম কমতে পারে। তবে দীপাবলির আগে পর্যন্ত দাম ৭ টাকা বা তার বেশিও হতে পারে। এই সময় বাজারে ডিমের চাহিদা বাড়িয়ে তুলবে বেকারিগুলি। শীতকাল এবং বড়োদিনকে সামনে রেখে কেক তৈরির জন্য ডিমের চাহিদা আরও তুঙ্গে উঠবে।