
শরণানন্দ দাস, কলকাতা: বেসরকারী বাস পরিষেবা নিয়ে জট কাটছে না। বেসরকারি বাস সংগঠনের তরফে এত দিন অবধি জানানো হয়েছে যে, তাঁদের ‘যত সিট তত যাত্রী’তে কার্যত ক্ষতির মুখ ছাড়া আর কিছু দেখছেন না। যা আয় হচ্ছে তাঁর থেকে খরচ বেশি হচ্ছে। তার উপর জ্বালানির দাম বেড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে পাত্তা না দিয়ে আজ থেকে রাস্তায় কোনও বাস নামাচ্ছেন না বেসরকারি বাস মালিকেরা। ফলে গত কয়েকদিনের মতো আজও রাস্তায় নামছে না প্রায় ৬০০০ বেসরকারি বাস।
বেসরকারি বাস পথে না নামায় যাত্রীদের যান যন্ত্রণা কয়েক গুন বেড়ে গেছে। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে চূড়ান্ত নাকাল হলেন আমজনতা। টালা থেকে টালিগঞ্জ সর্বত্র ছবিটা একই। ভাড়া বৃদ্ধির প্রশ্নে জট না খোলায় এ’ ক’দিন সাকুল্যে হাজার দুয়েক বাস নামছিল। এদিন তাও নামেনি, ফলে একমাত্র সরকারি বাসের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে যাত্রীদের। দীর্ঘ অপেক্ষার পর যখন সরকারি বাস এসেছে তাতেও বাদুড়ঝোলা ভিড় , ওঠা যায়নি।
উত্তর থেকে দক্ষিণ, কলকাতার সব প্রান্তেই দুর্ভোগের ছবিটা একই। যাদবপুর, রুবি, হাইল্যান্ড পার্ক, বেহালা, সল্টলেক, খিদিরপুর, শিয়ালদা, মৌলালি, ধর্মতলা, শ্যামবাজার, সিঁথি মোড়, ডানলপ সব জায়গায় অফিস টাইমে বাসস্টপে অফিসযাত্রীরা দাঁড়িয়ে থেকেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অনেকে বাধ্য হয়ে সাইকেলে সওয়ার হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ১৫ জুলাই পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন বন্ধের সিদ্ধান্ত তামিলনাড়ু সরকারের
মুখ্যমন্ত্রী গত শুক্রবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করেছিলেন কলকাতার ৬ হাজার বাসমালিককে তিনমাস ধরে ১৫ হাজার টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে। ফলে পরিবহন সমস্যা হবে না। কিন্তু বাসমালিকরা এই ভর্তুকি নিয়ে আদৌ খুশি নয়। তাঁদের বক্তব্য এই টাকায় তাঁদের সমস্যা মিটবে না। উপরন্তু জেলার বাসমালিকরা কি দোষ করলেন? তাই জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের রবিবার ঘোষণা করে সোমবার থেকে শহর, জেলা কোথাও রাস্তায় বেসরকারি বাস নামবে না।
জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘ আমাদের কিছু করার নেই, মালিকরা তো আর লোকসান দিয়ে বাস চালাবে না। ডিজেলের দাম ৭৫ টাকা ছাড়িয়েছে। যাত্রী হচ্ছে না, ভাড়াও বাড়ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মাত্র ৬ হাজার বাস মালিকদের অনুদানের কথা বলছেন, বাকিরা কি দোষ করলো? ভাড়া না বাড়ালে এই পরিস্থিতিতে বাস চালানো সম্ভব নয়।’ সুতরাং পথে নামলে দুর্ভোগ সইতে হবে। সেইসঙ্গে আতঙ্ক বাড়ছে, এই ভিড়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব। ফলে করোনার সংক্রমণের ভয়ও পাচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা।