জিন্স টি-শার্ট পরে আত্মহত্যা প্রতিবন্ধী প্রোমোটারের ! পর্ণশ্রীর ঘটনার নেপথ্যে রহস্য

অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: সাধারণ চোখে মনে হবে আত্মহত্যাই। কিন্তু যে ব্যক্তি নিজে অন্যের সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারে না এমনকি বাথরুমটাও যেতে পারে না সে ফাঁকা বাড়িতে কিভাবে চারতলায় গিয়ে আত্মহত্যা করবে? এই প্রশ্নটাই উঠে গিয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যায় বেহালার পর্ণশ্রী এলাকায় ঘটে যাওয়া এক প্রোমোটারের ইন্দ্রজিৎ দাসের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায়। আর এই প্রশ্ন কিন্তু এখন ভাবাচ্ছে পুলিশকেও।
প্রসঙ্গত, ইদানীং খুব একটা বাড়ি থেকে বেরোতেন না প্রোমোটার ইন্দ্রজিৎ দাস। কারণ ২০১৭ সালে তিনি বিরাট দুর্ঘটনার মধ্যে পড়লেও প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু ডান পায়ের হাড় ভেঙে যাওযার কারণে তারপর থেকেই ভালো ভাবে হাঁটাচলা করতে পারতেন না ইন্দ্রজিৎ বাবু। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে ফ্ল্যাটের তিন তলায় থাকতেন তিনি।
শুক্রবার মেয়েদের লেখাপড়ার কিছু জিনিস কিনতে বাইরে বেরিয়ে ছিলেন তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে। বাড়িতে একা ছিলেন ইন্দ্রজিৎ বাবু। তাঁকে জলখাবার দিয়ে যান স্ত্রী। আধ ঘণ্টার মধ্যে ফিরেও আসেন। বাড়িতে ঢুকতেই দেখেন ঘরে নেই বাবা। চার তলার ঘরে গিয়ে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে বাবা। তখনও ইন্দ্রজিৎ বাবুর শরীরে প্রাণ ছিল। সকলে মিলে তাঁকে নামানোর চেষ্টা করে। বড় মেয়ে জানিয়েছে, বাবা কিছু একটা বলার চেষ্টা করছিল তাঁকে। কিন্তু বলা হয়ে ওঠে না। তার আগেই মারা যান ইন্দ্রজিৎ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুলিস জানতে পারে, যখন স্ত্রী ও দুই মেয়ে বাড়ি থেকে বের হয় তখন বাড়ির পোশাকে ছিলেন ইন্দ্রজিৎবাবু। তাঁরা যখন ফিরে এসে তাঁকে ওই মারাত্মক অবস্থায় দেখেন, তখন ইন্দ্রজিৎবাবু পরে ছিলেন জিন্স ও টি শার্ট। অথচ তাঁর বাইরে বের হওয়ার কোনও কথা ছিল না। তাঁর পক্ষে ভারী কাঠের চেয়ার চাল তলায় নিয়ে যাওয়ার খুব একটা সহজ ব্যাপারও ছিল না। অন্যদিকে, মাত্র ত্রিশ মিনিটের মধ্যে পোশাক বদলে, ভারী চেয়ার নিয়ে চার তলায় উঠে, স্ত্রীর শাড়ি কেটে তাতে গিঁট দিয়ে এমন ভাবে আত্মহত্যা করা সম্ভব নয়।এতকিছু আধঘন্টায় আর কারোর একার পক্ষে সম্ভব কিনা, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন তুলেছে ইন্দ্রজিতবাবুর পরিবার। তাদের অভিযোগ, তাঁদের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
ঘটনার পিছনে পুরোনো প্রমোটিং সংক্রান্ত বিবাদ ছাড়াও পুরাতন কোনও বিবাদও থাকতে পারে। পুলিশ অবশ্য ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আর সব সম্ভবনাই খতিয়ে দেখছে। পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ সহ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ