পুজোয় হ্যাণ্ড গ্লাভস উপহার বঙ্গোপসাগরের জেলেদের

ভাস্করব্রত পতি, তমলুক : বেছে নেওয়া হয়েছিল নতুন ভাবনা। তা হল বঙ্গোপসাগরের মাঝিমাল্লাদের “হাতের সুরক্ষা”। রামনগর ও খেজুরী অঞ্চলে অনেকেই দাঁড় বাওয়া নৌকো নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যান। যাঁরা দাঁড় টানেন, তাঁদের হাতের অবস্থা চূড়ান্ত ফুটিফাটা। এছাড়াও রয়েছে জাল টানার অমানুষিক কাজ। সমুদ্র থেকে জাল টেনে তুলতে হাতের কি অবস্থা হয়, তা আর কহতব্য নয়।
দুর্গাপুজো উপলক্ষে ‘মিডনাপুর ডট ইন’ এর পক্ষ থেকে সেই সমস্ত মৎস্যজীবীদের হাতে তুলে দেওয়া হল দুটি ভিন্ন ধরণের গ্লাভস। ব্যাবস্থাপনায় ছিলো রাজকুমার দাস ও জ্যোতির্ময় খাটুয়া। প্রথম পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে রামনগরের শংকরপুর এবং জলধা খটি অঞ্চলে এই গ্লাভস বিতরণ করা হয়। এক অনাস্বাদিত উপহার তাঁরা পেলো পুজোর প্রাক্কালে।
আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতে গিয়ে, ‘মিডনাপুর ডট ইন’ এর সদস্যরা জেনেছিলো দৈনন্দিন জীবনে এইসব মৎস্যজীবীদের নানা সমস্যার কথা। সংগঠনের সম্পাদক অরিন্দম ভৌমিক জানান, আমরা বুঝতে পেরেছিলাম সব সমস্যার সমাধান আমরা হয়তো করতে পারবোনা। তাই ঠিক করেছিলাম, যে কোন একটা বিষয় বা সমস্যা নিয়ে আমরা এগোবো। সেটার সমাধান করতে পারলেই যাবো পরেরটায়। তাই মৎস্যজীবীদের হাতের সুরক্ষায় পূজোর মুখে দেওয়া হোলো হ্যাণ্ড গ্লাভস।
সেই কোন মধ্য প্রস্তর যুগ (Mesolithic) থেকে মানুষ মাছ ধরা শুরু করেছে। বাঙালিদের তো আবার মাছ না হলে চলেইনা। এই মাছের ব্যবসা আবার বেশ লাভজনকও বটে। কিন্তু যাঁরা মাছ ধরেন, তাঁদের কি অবস্থা? এত যুগ পেরিয়েও তাঁদের অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলীয় এলাকার সাধারণ মৎস্যশিকারীদের দেখলেই বোঝা যায়, এঁদের অবস্থা এখনও তথৈবচ। এহেন মৎস্যজীবীদের জন্য অভিনব এই উপহার কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে তাঁদের নিকষ কালো হাতে।