রাজকীয় মর্যাদায় সম্পন্ন রানির অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া, নীরবতা পালন সহ জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

যুগশঙ্খ, ওয়েবডেস্ক: আজ সম্পূর্ণ রাজকীয় সম্পন্ন হল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য। বিশ্বের রাষ্ট্রনায়ক এদিন উপস্থিত থাকলেন রানি শেষযাত্রায়। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার সময় ২ মিনিট নীরবতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যষ্টিক্রিয়া। এরপর বেজে ওঠে জাতীয় সংগীত। ১২টা ১৫ মিনিটে মরদেহ নিয়ে যাত্রা শুরু হয় উইন্ডসর ক্যাসেলের দিকে। তবে যাত্রা শুরু করে এটি দুপুর ১টায় পৌঁছয় হাইড পার্ক কর্নারে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করবে উইন্ডসর ক্যাসেটের দিকে।
এর আগে সকাল ১০টা ৪৪ মিনিটে মরদেহ ওয়েস্টমিনিস্টার হল থেকে বের হয়ে যাত্রা শুরু করে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে পৌঁছায়। এই যাত্রাটির সম্মুখভাগে ছিল রয়েল নেভী। পেছনে ছিলেন রাজা তৃতীয় চার্লস, প্রিন্সেস এ্যান, প্রিন্স এন্ড্রু ও প্রিন্স এডওযার্ড।
সঙ্গে ছিলেন প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারি। ১০টা ৫২ মিনিটে রানির মরদেহবাহী কফিন পৌঁছায় ওয়েস্ট মিনিস্টার অ্যাবেতে। এসময় ওয়েস্ট মিনিস্টার অ্যাবেতে। আর্চবিশপ অব ক্যান্টাবারী জাস্টিন ওয়েলবাই যোগ দেন। কফিন রাখা হয় উঁচু বেদীতে।
ঠিক ১১টায় শুরু হয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার মূল পর্ব। এই পর্ব পরিচালনা করেন ওয়েস্ট মিনস্টারের ডীন। এসময় প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও কমনওয়েলথ সেক্রেটারি প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড বাইবেল থেকে পাঠ করেন।
এরপর আর্চবিশপ অব ক্যান্টাবারী জাস্টিন ওয়েলবাই ধর্মের উপদেশ বানী পড়ে শোনান ঠিক ১১টা ৫৫ মিনিটে শেষ হয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর্ব।
এরপর ৫ মিনিট মিউজিকের মধ্যদিয়ে সামরিক বাহিনী ও যুদ্ধের সময়ে রানির অংশগ্রহণ ও অবদান স্মরণ করা হয়। ঠিক ১২টায় ২ মিনিট নীরবতা পালন হয় সারাদেশে। বেজে ওঠে জাতীয় সংগীত।
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবি হল সেই ঐতিহাসিক গির্জা, যেখানে ব্রিটেনের রাজা ও রানিদের মুকুট পরানো হয়। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বিয়ে ও রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানও আয়োজিত হয়েছিল এখানেই।
স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলে রানির মৃত্যুর পর থেকে যে কফিনে এতদিন তাঁকে রাখা হয়েছে তা ৩২ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল। টেকসই ওককাঠ দিয়ে তৈরি করা হয় কফিনটি। রাজকীয় রীতি মেনে এর গায়ে সীসার পাত দেওয়া আছে। আর এ কারণে কফিনের ওজন অনেক বেশি।
মোট আটজন বাহক কফিনটি বহন করেন। সীসার পরত থাকায় কফিনটি বাতাস ও আর্দ্রতা প্রতিরোধী। এ কারণেই এতে দীর্ঘ সময় ধরে দেহ সংরক্ষণ করা যায়।
১৯৯১ সাল থেকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পরিচালনা করে লেভারটন অ্যান্ড সন্স। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ওই বছরই উত্তরাধিকারসূত্রে তারা কফিনটি পেয়েছিল। এটি কে তৈরি করেছিলেন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
কফিনের ভেতর রানির মরদেহের সঙ্গে কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র রাখা হবে। সেগুলো নিরাপদে রাখতে এর ঢাকনাটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। কফিনটির পিতলের হাতল তৈরি করেছে বার্মিংহামের একটি প্রতিষ্ঠান।