সালিশি সভায় চরিত্র নিয়ে অপবাদ দিয়ে মারধর, অপমানে আত্মঘাতী প্রৌঢ়
প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: সালিশি সভায় চরিত্র নিয়ে মিথ্য অপবাদ দিয়ে মারধর করায় অপমানে আত্মঘাতী হলেন এক প্রৌঢ়। মৃতের নাম নেপাল রুইদাস(৬০)। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার মাঠশিয়ালি গ্রামের দাসপাড়ায়।মৃতের ছেলে ঝন্টু রুইদাস ঘটনা সবিস্তার উল্লেখ করে বুধবার জামালপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনার ধারায় মামলা রুজু করলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ যদিও জানিয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রৌঢ় নেপাল রুইদাসকে গত মঙ্গলবার সকালে গ্রামের কাঁঠালগাছে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা। তারাই এই ঘটনার বিষয়ে জামালপুর থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গামছা কেটে প্রৌঢ়কে উদ্ধার করে জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়।সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রৌঢ়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন।প্রৌঢ় আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।
বাবার এই আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় ছেলে ঝন্টু রুইদাস বুধবার জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশকে ঝন্টু জানিয়েছে, তাঁর বৃদ্ধ বাবা সোমবার বিকাল ৪টে নাগাদ এক প্রতিবেশীর বাড়ির কাছে যান। সেই সময়ে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরে ওই প্রতিবেশী। তিনি তাঁর বাবাকে দেখতে পেয়েই সেখানে উপস্থিত হওয়ার কারণ জানতে চান। ঝন্টু বলেন, এইসব নিয়ে তাঁর বাবার সঙ্গে ওই প্রতিবেশীর কথা কাটাকাটি হয়।এরপর ওই দিনই বিকাল ৫ টা নাগাদ তাঁর বাবা মাঠ থেকে গরু আনতে যান। তখন ওই প্রতিবেশী ও তার স্ত্রী মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাঁর বাবাকে মারধর করে।
এই ঘটনা নিয়ে এলাকার কয়েকজন মাতব্বর গ্রামে সালিশি সভা বসায়। সেখানে চরিত্র নিয়ে অপবাদ দিয়ে তাঁর বাবাকে মারধর করা হয়। সালিশি সভায় উপস্থিত কয়েকজন আবার তাঁর বাবাকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। ঝন্টু বলেন, চূড়ান্ত অপমানিত হয়ে তাঁর বাবা সালিশি সভা থেকে বাড়িতে ফেরে অসুস্থ বোধ করে। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওষুধ কেনার কথা বলে তাঁর বাবা বাড়ি থেকে বের হন। রাতে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন সকালে তাঁর বাবার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
ঝন্টু রুইদাস দাবি করেছেন, ‘চরিত্র নিয়ে মিথ্য অপবাদ দিয়ে যারা তার বাবাকে আত্মঘাতী হতে বাধ্য করেছে পুলিশ তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’