শ্যামনগর ও গারুলিয়ায় করোনায় আক্রান্ত দুই মহিলা, সিল করা হল সংশ্লিষ্ট এলাকা
অলোক কুমার ঘোষ, ব্যারাকপুর: ফের করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলল উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে শিল্পাঞ্চলে। এবার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে আরও ২ জনের দেহে মিলল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। ভাটপাড়া পৌরসভার অন্তর্গত ২৭ নং ওয়ার্ডের ৪০ বছর বয়স্ক এক মহিলার দেহে মিললো করোনা ভাইরাস। অন্যদিকে গারুলিয়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক বৃদ্ধার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর ও গারুলিয়ায় এই ২ টি ঘটনা জানাজানি হতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে শ্যামনগর শরৎপল্লী এবং গারুলিয়ার ভীমের মোড় এলাকায়।
জানা গেছে, ভাটপাড়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামনগরে করোনা আক্রান্ত ওই মহিলার স্বামী এলাকার বিভিন্ন বাড়ি গিয়ে ইলেকট্রিক বিল পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতেন। তবে ওই মহিলা বাড়িতেই থাকতেন । মহিলার স্বামীর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তবে ওই মহিলা দোকানে বা বাজারে গিয়েছিলেন, ফলে সেখান থেকে ওই গৃহবধূ সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বেশ কয়েকদিন ধরে শ্যামনগরের ওই গৃহবধূ অসুস্থ ছিলেন। ফলে করোনা টেস্ট করা হলে তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
এই খবর পাওয়ার পর ভাটপাড়া পৌরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে সাস্থ্য কর্মীরা এসে ওই মহিলাকে বারাসতের করোনা হাসপাতালে ভর্তি করে এবং ওই করোনা আক্রান্তের মেয়ে ও স্বামীকে কয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই এলাকাটিকে সম্পূর্ণ ভাবে সিল করে দেওয়া হয়েছে।
এই মহিলার করোনায় আক্রান্ত হওয়া সম্পর্কে ভাটপাড়া পৌরসভার ওই ২৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোমনাথ তালুকদার বলেন, “আমাদের এখানে এই প্রথম করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যেই ওই মহিলার স্বামী ও মেয়েকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে এবং ওই পরিবারের বাকি ২৩ জন সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। এলাকাবাসীদের অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। ওই এলাকাটিও আমরা সম্পূর্ণ সেনেটাইজ করে দিয়েছি।”
অপরদিকে, গারুলিয়া পৌরসভার অন্তর্গত ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভীমের মোড় এলাকার বাসিন্দা এক বৃদ্ধার দেহে মিলল করোনা ভাইরাস। ওই বৃদ্ধার সঙ্গে ব্যারাকপুর বি এম আর সির যোগ আছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বেশ কিছু দিন ধরেই গারুলিয়ার ওই বৃদ্ধা মহিলা কিডনি জনিত সমস্যা ও ফুসফুসে সংক্রমন নিয়ে ব্যারাকপুরে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তবে বি এম আর সি তে ৮ জন সাস্থ্য কর্মী করোনা পজিটিভ হওয়ায় বর্তমানে ওই বৃদ্ধাকে কলকাতার অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। শনিবার রাতে সেখানেই তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
এইপরই নোয়াপাড়া থানার পুলিশ প্রশাসনও গারুলিয়া পৌরসভার কর্মীরা গিয়ে ওই এলাকাটি বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেয়। আর সেইসঙ্গে সেনিটাইজ করে দেওয়া হয় গারুলিয়া পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড। করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধার বাড়ির বাকি সদস্যদের হোম কয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। গারুলিয়ায় করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধার ছেলে জানান, “আমার মায়ের ৬১ বছর বয়স। ব্যারাকপুর বি এম আর সি হাসপাতালে ওনার ডায়ালিসিস চলছিল এবং তার ফুসফুসে সংক্রমণ ছিল। তবে গত ৫ দিন ধরে উনি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। আমার মা এখনো পর্যন্ত ভালো আছেন।”
গারুলিয়াতে করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায় । গারুলিয়া পৌরসভার পক্ষ থেকে এলাকাবাসীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং সমস্ত সরকারি নির্দেশ মেনে চলতে অনুরোধ করা হয়েছে।