শিলিগুড়িতে বিজেপির মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার, আহত একাধিক

কৃষ্ণা দাস, শিলিগুড়ি: নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে বিজেপির মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার কান্ড শিলিগুড়িতে। মিছিলে মহিলামোর্চা ও যুব মোর্চার কর্মীদের কাপড় ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ। আহত একাধিক। ক্ষমতায় এসে এর প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের হুঁশিয়ারি। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে রাজ্য জুড়ে চলা নারী নির্যাতন সহ রাজগঞ্জের নাবালিকা ধর্ষনে প্রতিবাদ জানিয়ে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের সুইমিং পুলের সামনে থেকে বিজেপির রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি মহিলা মোর্চা ও যুব মোর্চার তরফে একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়। এই মিছিলের পর মহকুমা শাসককে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের সক্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। এই মিছিলে পা মেলাতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, রাজ্য যুব মোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খান, জেলা পর্যবেক্ষক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত সহ অন্যান্যরা।
মিছিল আটকাতে আগে থেকেই মজুত ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী, ছিল জলকামান। বিভিন্ন জায়গা থেকে বাঁশ এনে কোর্ট মোড় থেকে হাসমিচকে আসার মোড়ে ও হাসমিচক থেকে মহাত্মা গান্ধী চকে যাওয়ার পথে মোড়ের মাথায় পরপর দু জায়গায় ব্যারিকেড দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। মিছিলটি সুইমিং পুল থেকে শুরু হয়ে হাসপাতাল মোড় হয়ে হাসমিচকে যাওয়ার প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে পরের ব্যারকেড ভাঙতে গেলে পুলিশ প্রশাসন জলকামান প্রস্তুত করতে শুরু করে। এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের সাথে ধ্বস্তাধস্তি।
এর ফলে কয়েকজন মহিলা কর্মী আহত হয় ও পুরুষ ও মহিলা কর্মীদের কাপড়ও ছিড়ে যায়। বেশ কয়েকজনকে টানতে টানতে আটকও করে পুলিশ প্রশাসন। বাধা পেয়ে রাস্তার ওপরই জলকাদার মধ্যেই বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল সহ মহিলা কার্যকর্তারা। অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা সে রাজ্যের মহিলারাই নিরাপদ নয়। এর প্রতিবাদ জানাতে গেলে আটকে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন- মর্মান্তিক…মোমবাতি থেকে বাড়িতে আগুন, পুড়ে মৃত্যু ২ বছরের শিশুর, অগ্নিদগ্ধ আরও তিন]
পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের ভুমিকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে নেত্রী বলেন আর তো ছয়মাস তারপর বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর এই পুলিশকেই বিজেপির হয়ে কাজ করতে হবে। তাই পুলিশ প্রশাসনকে একটু সাবধানি হয়ে কাজ করার আবেদন জানান না হলে ক্ষমতায় আসার পর তাদের বদলী অবশ্যম্ভাবি। অন্যদিকে সৌমিত্র খান বলেন, এই মিছিল আটকে পুলিশের বাধায় ৭ জন মহিলা কর্মী আহত হয়েছেন তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করে বলেন, কয়েকজন সিভিক পুলিশ মহিলাদের কাপড় টেনে ছিড়ে দিচ্ছে।
একদিকে তৃণমূলের গুন্ডা বাহীনি মহিলাদের বাড়িতে ঢুকে ধর্ষন ও শ্লীলতাহানী করছে অন্যদিকে পুলিশ প্রশাসন জনসমক্ষে মহিলাদের কাপড় টানছেন। অন্যদিকে সায়ন্তন বসু বলেন, এতদিন শুনেছিলাম শিলিগুড়িতে বিজেপির কর্মীরা রাস্তায় নামলেই তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এখন স্বচক্ষে দেখলাম। শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক অশোক ভট্টাচার্য বিজেপির মিছিল আটকানোর কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বিজেপি মিছিল করতে চায় করুক। তাদের আটকে বিজেপিকে হিরো বানানোর চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। এদিন পরে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মহকুমা শাসকের দফতরে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন। তারা হলেন বিজেপি রাজ্য সভনেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল, শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায়, জেলা বিজেপি সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল, বিজেপি রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রথীন্দ্র বোস, জেলা পর্যবেক্ষক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত।