
শরণানন্দ দাস, কলকাতা: কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী বুধবার ৫ আগস্ট ঠিক দুপুর সোয়া ১২ টায় ৪০ কেজি রুপোর ইট স্থাপন করে রাম মন্দির নির্মাণের ভূমিপুজোর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকবেন পূর্ণিমা কোঠারি। রাম মন্দির আন্দোলনে শহিদ এই শহরেরই দুই তরুণ রাম ও শরদ কোঠারির বোন তিনি।
রবিবার সকালে গণেশ টকিজের কাছে নিজের বাড়িতে কথা বলছিলেন পূর্ণিমা। সামনের দেওয়ালে টাঙানো দুই দাদা রাম কোঠারি ও শরদ কোঠারির বাঁধানো ছবি। কপালে চন্দনের ফোঁটা আর ফুলের মালায় বড়ো জীবন্ত । পূর্ণিমা জানালেন, ‘ গত ২৭ জুলাই অযোধ্যায় রামমন্দির ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ভূমিপুজোয় উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ পেয়েছি। আমার কাছে এটা খুবই সম্মানের। সবচেয়ে বড়ো কথা আমার দুই দাদা যে স্বপ্ন নিয়ে অযোধ্যায় গিয়েছিলেন আজ তা পূর্ণ হচ্ছে। ওদের বলিদান আজ সার্থক।’ সোমবার অযোধ্যায় রওনা হচ্ছেন , সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন দুই দাদার স্মৃতি চিহ্ন। পূর্ণিমা জানালেন, ‘ আজ থেকে ৩০ বছর আগে যখন অযোধ্যায় রামমন্দির আন্দোলনে যোগ দিতে রাম ও শরদ কোঠারি যান তখন ওঁরা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের কোম্পানি বাগান, শোভাবাজার ও তারা সুন্দরী পার্কের দায়িত্বে ছিলেন। তাই এই তিন জায়গায় মাটি আমি সঙ্গে করে নিয়ে যাবো।’
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন অমিত শাহ
স্মৃতিতে ডুব দিয়ে বলেন, ‘ এখনও মনে পড়ে আমার ডিসেম্বরে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। আমার বাবা বললেন, একভাই অন্ততঃ থেকে যাক। কিন্তু ওরা শোনেনি, ২২ অক্টোবর দুপুরে অযোধ্যায় রওনা হলো। ঘটনাটা ঘটেছিল ২ নভেম্বর, কিন্তু আমরা খবর পাইনি। বাবার বড়ো বাজারে দোকান ছিল। উনি জানতে পেরেছিলেন, দাদাদের গুলি লেগেছে। আমরা তখন বেলুড়ে থাকতাম। পরদিন মেসোমশাই খবর দেন দাদারা পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছে। তখন রামের বয়স ২২, শরদের ২০।’ ছলছল করে উঠলো পূর্ণিমার চোখ। দাদাদের ছবিতে পরম মমতায় হাত বুলিয়ে বলে ওঠেন, ‘এতোদিন অপেক্ষা করেছি এই মুহূর্তটার জন্য । আমার সৌভাগ্য আমি শরিক হতে পারছি রাম মন্দিরের ভূমি পুজোর পূণ্য মুহূর্তের।’ তবু চোখের কোল বেয়ে জল নামলো, হাতের চেটোয় মুছে নিলেন জলের বিন্দু।