JEE, NEET পিছোতে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন পশ্চিমবঙ্গ সহ ৬ রাজ্যের
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আবহের কারণে সর্বভারতীয় ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা ‘নিট’ এবং ‘জেইই’ (মেন)-সহ অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পিছোনোর দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল ৬ রাজ্য। পরীক্ষাগুলি আয়োজনের ‘সুপ্রিম’ নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে যৌথভাবে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছেন ৬ অ-বিজেপি রাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী। এই রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও রয়েছে পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, ছত্তিসগঢ় ও ঝাড়খণ্ড। মূল আবেদনকারী পশ্চিমবঙ্গের আইনমন্ত্রী।কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে বুধবার আলোচনা করে আইনি পথে যাওয়ার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হয়েছে।
সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও যৌথ রিভিউ পিটিশনকে সমর্থন করেছে পঞ্জাব, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ডের মতো রাজ্যগুলির সরকার। সকলেরই দাবি, করোনা আবহে এই মুহূর্তে প্রতিযোগীতামূলক প্রবেশিকা পরীক্ষাগুলি নেওয়া অসম্ভব। বিভিন্ন রাজ্যেই পরিবহন ব্যবস্থা এখনও সেভাবে সক্রিয় হয়নি। এমনকি পরীক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নেওয়াটা উচিত নয় বলেও মনে করেন আবেদনকারীরা। তাই এদিন সুপ্রিম কোর্টে ৬ রাজ্যের প্রতিনিধিরা পরীক্ষা পিছোনোর আবেদন জানায়।এই মামলার মূল আবেদনকারী পশ্চিমবঙ্গের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমি মামলা দায়ের করেছি। বাকিটা তিনিই বলবেন।’
গত বুধবার সনিয়া গান্ধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বিরোধীদের ভার্চুয়াল বৈঠকের মুখও ছিল পশ্চিমবঙ্গই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সে দিন সব রাজ্যকে একজোট হয়ে নিট ও জেইই পিছোনোর দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে যৌথভাবে মামলা করার প্রস্তাব দেন। তাতেই সহমত হন প্রত্যেকেই। মামলার মূল নথি তৈরি করেছেন অভিষেক মনু সিংভি, তাঁর সঙ্গে আছেন আরও কয়েক জন বিশিষ্ট আইনজীবী।
আরও পড়ুন: নির্বাচিত নেতৃত্ব না থাকলে, আগামী ৫০ বছর বিরোধী আসনেই থাকবে কংগ্রেস: গুলাম নবি আজাদ
গত ১৭ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে জানায়, এ বছর নির্ধারিত তারিখেই হবে NEET ও JEE। দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের বাড়-বাড়ন্তের কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা দুটি আপাতত বাতিল করার আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। সেই পিটিশন খারিজ করে দেয় আদালত। বিচারপতিরা বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ার কিছুতেই বিপদের মুখে ফেলা যাবে না। ছাত্রছাত্রীদের একটা বছর নষ্ট করার মানে হয় না৷ শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্ট নিজেদের পর্যবেক্ষণে বলেছিল, করোনা অতিমারির মধ্যেও ‘জীবন থেমে থাকতে পারে না৷’সব রক্ষাকবচ নিয়েই আমাদের এগিয়ে চলতে হবে। সব ছাত্রছাত্রী কি একটা বছর নষ্ট করতে প্রস্তুত আছে? শিক্ষা ব্যবস্থা খোলা দরকার। কোভিড আরও এক বছর থাকতে পারে। তোমরা কি আরও একটা বছর অপেক্ষা করতে রাজি আছো? তোমরা কি জানো দেশের কতটা ক্ষতি হচ্ছে? এবং তার ফল ছাত্রছাত্রীদের উপর কী পড়বে?’
ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি জানিয়ে দিয়েছে, ১ থেকে ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে JEE(Main) এবং ১৩ সেপ্টেম্বর NEET(UG) পরীক্ষা নেওয়া হবে৷ বিরোধীদের অভিযোগ, করোনা অতিমারির মধ্যে এই পরীক্ষা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে৷ পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছতেও অসুবিধা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে৷ ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি অবশ্য জানিয়েছে, সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরীক্ষা নেওয়া হবে৷