সামাজিক দূরত্বকে মাথায় রেখে আসানসোল জেলা হাসপাতালের বাইরে হলো রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক
শুভেন্দু বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল: সামাজিক দূরত্ব বা সোশাল ডিস্টেন্সের কথা মাথায় রেখে আসানসোল জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকের স্থান পরিবর্তন করা হলো। এতদিন পর্যন্ত এই বৈঠক করা হতো হাসপাতালের ডিএনবি হলে।
রবিবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকটি হয় হাসপাতালের অদূরে এসবি গরাই রোডে একটি ম্যারেজ হলে । এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক। এছাড়াও এদিনের বৈঠকে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ দেবাশীষ হালদার, আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলার শিবদাস চট্টোপাধ্যায়, পুরনিগমের মেয়রের প্রতিনিধি প্রাক্তন মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলাম, হাসপাতাল সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস, হাসপাতালের তিন চিকিৎসক, নার্সিং সুপার, তিন সহকারী সুপার সহ অন্যান্যরা। বৈঠকে থাকা সবাই সামাজিক দূরত্ব মেনে দূরে বসার পাশাপাশি মুখে মাস্ক ও মাথায় হেড কভার পড়েছিলেন। মন্ত্রী নিজে হাতে গ্লাভস পড়েছিলেন।
করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় লক ডাউনের জন্য আড়াই মাসেরও বেশি ধরে জেলা হাসপাতালে একমাত্র জরুরী প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের অস্ত্রপচার বা অপারেশন বন্ধ রয়েছে। সেইসব অপারেশনের দিন আগে থেকে দেওয়া রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই অপারেশন বন্ধ থাকায় একদিকে হাসপাতালের উপর চাপ বাড়ছে, অন্যদিকে রোগীরা সমস্যায় পড়েছেন। লক ডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ায় সোমবার বা এই সপ্তাহের যেকোন দিন সেই অপারেশন চালু করার ব্যাপারে এদিনের বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুপার বলেন, হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসকরা এতে সম্মতি দিয়েছেন। বৈঠকে মন্ত্রী সহমত প্রকাশ করেন। বলা হয়েছে, রোগীদের অস্ত্রপচারের আগে ট্রুনেট যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের করোনা পরীক্ষা করে নেওয়া হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়।
এই বৈঠকে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে ডাঃ নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় প্রস্তাব দিয়ে বলেন, জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের হাসপাতালের রোগী দেখার পাশাপাশি, আসানসোলের সেনরেল রোডে একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে করোনা সন্দেহে ভর্তি থাকা রোগীদের দেখতে হচ্ছে। তাই তাদের উপর চাপ বাড়ছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই সেই হাসপাতালে রোগীরা আসছেন । লক ডাউন থাকায় জেলা হাসপাতালে রোগীরা কম আসছিলেন। কিন্তু, লক ডাউন কিছুটা হলেও শিথিল হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বার্ণপুরের ইস্কো , ইসিএল আসানসোল রেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের এনে ঐ বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করানো হলে, জেলা হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপরে কিছুটা হলেও চাপ কমবে। এই বিষয়ে সিএমওএইচ বলেন, আমরা এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না । এই প্রস্তাব জেলাশাসককে জানানো হবে। প্রয়োজনে আলোচনা করা হবে । মন্ত্রী মলয় ঘটক হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাসের কাছ থেকে জেলা হাসপাতালে করোনার সংক্রান্ত বিষয়ে কি ধরণের চিকিৎসা বা কাজ হচ্ছে তার যাবতীয় তথ্য নেন ।
এদিন মন্ত্রীর কাছে চিকিৎসকরা প্রস্তাব দেন এই জেলায় করোনা আক্রান্তর সংখ্যা বাড়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে দূর্গাপুরের কোভিড ১৯ হাসপাতালের মতো আসানসোলে যাতে একটি হাসপাতাল নির্বাচন করে সেখানে চিকিৎসা করা হয়। মন্ত্রী অবশ্য এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।