fbpx
দেশহেডলাইন

সনিয়াতেই আস্থা! কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী থাকছেন রাজীব পত্নী

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক:  দিনভর শুধু  ‘মহানাটক’ , অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ এবং মান অভিমানের পালা। শেষ স্নিয়াতেই আস্থা। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গান্ধীর একটি মন্তব্য ঘিরে যখন কংগ্রেসের অন্দরে তোলপাড় চলছে, ঠিক তখনই দলের দুই বর্ষীয়ান নেতা বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট করে দিলেন তাঁরা রাহুল তথা গান্ধীদের সঙ্গেই আছেন। এবং কংগ্রেস সুত্রে খবর, শেষ পর্যন্ত সোনিয়াকেই অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে বলা হবে। তিনি পদত্যাগ করতে চাইলেও, তা  গ্রহণ করবে না  দল। তবে আগামী ৬ মাসের মধ্যে নতুন সভাপতি নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু করছে কংগ্রেস।

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শুরু হতেই তুলকালাম শুরু হয় বৈঠকে। কংগ্রেসের ২৩ নেতা চাইছিলেন দলের একজন পূর্ণ সময়ের নেতা ও সাংগঠনিক স্তরে আমূল রদবদল। রাহুল-প্রিয়ঙ্কা-মনমোহন সহ দলের বিরাট অংশের চাপে শেষপর্যন্ত পিছিয়ে আসতে বাধ্য হলেন তাঁরা। এমনকি গুলাম নবি আজাদের মতো নেতাও সমালোচনার চাপে পড়ে পদত্যাগ করার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন।

এদিন সব ঝামেলা মিটিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কংগ্রেসের দায়িত্ব আপাতত থাকছে সনিয়া গান্ধির ওপরে। এছাড়াও এদিন ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় আলোচিত হয়েছে। তার প্রথমেই আলোচিত হয়েছে ইস্যু। সেখানে বলা হয়েছে, করোনা অতিমারী, অর্থনৈতিক সংকট, বেকারত্ব ও সীমান্ত সুরক্ষাই এখন দেশের রাজনীতির প্রধানতম ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেগুলিকে বিরোধী দল হিসাবে লাগাতার তুলে ধরাটা এখন কংগ্রেসের কাজ। পাশাপাশি, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি মনে করছে সাম্প্রতিককালে কেন্দ্রীয় শাসকদলের বিভাজনের রাজনীতি ও বিপথে চালনা করার রাজনীতিকে সফলভাবে তুলে ধরার কাজ করেছেন সনিয়া গান্ধি ও রাহুল গান্ধি। পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে যেভাবে সনিয়া গান্ধি তাঁর চিঠিতে একাধিক ইস্যু তুলে ধরেছেন, এবং বিজেপি কীভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের হেলাফেলা করেছে, সেটা প্রকাশ করেছেন, তাতে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে আসল ছবিটা ফুটে

ওদিকে বৈঠকের মধ্যে মনমোহন-চিদম্বরম বলেন, সোনিয়া গান্ধীই দলকে নেতৃত্ব দিন তাতেই কংগ্রেসের মঙ্গল। আবার লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, গান্ধী পরিবারের বাইরে কারও দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা নেই। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর পরীক্ষা নীরিক্ষা করে সে সব দেখা হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন সনিয়াই। এখন রাহুলেরই উচিত সভাপতি পদের দায়িত্ব মেনে নেওয়া। অধীরবাবু বৈঠকে আরও বলেন, ৬ মাস অপেক্ষা করারও দরকার নেই। রাহুল রাজি থাকলে ৬ দিনের মধ্যেই তাঁকে সভাপতি মেনে নিতে দল প্রস্তুত। যদিও তাতে রা কাটেননি রাহুল। এদিন প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও বৈঠকে কোনও মন্তব্য করেননি। পরে বৈঠকের শেষে মনমোহন সিংহই প্রস্তাব দেন, আপাতত ৬ মাস কংগ্রেস সভানেত্রী থাকুন সোনিয়া গান্ধী। তার মধ্যে দলের সদস্য অভিযান ও সাংগঠনিক নির্বাচন হোক। তার পর ৬ মাসের মধ্যে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের অধিবেশন ডেকে নতুন সভাপতির অভিষেক হবে। সেই প্রস্তাবে সায় দেন চিদম্বরম। পরে সেটাই সর্বসম্মত প্রস্তাব হিসাবে গৃহীত হয়।

আরও পড়ুন: একমাসের মধ্যে দ্বিতীয় ঘটনা, উত্তরপ্রদেশে ফের গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক

তরফে দাবি করা হয়, ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল বিজেপি নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেননি। সিব্বল এবং আজাদ দুজনেই নিজেদের বক্তব্য ফিরিয়ে নেন। সিব্বল টুইট করে বলেন, রাহুল নিজে তাঁকে জানিয়েছেন, এই ধরনের কোনও মন্তব্য তিনি করেননি। আজাদও টুইট করেন। তিনি বলেন,”কংগ্রেসের অন্য কয়েকজন নেতা আমাদের বিজেপি (BJP) যোগ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাই আমি ইস্তফা দিতে চেয়েছি। রাহুল গান্ধী বিজেপি যোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।” আরেক বিদ্রোহী নেতা মুকুল ওয়াসনিক আবার CWC বৈঠকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন,” সনিয়ার থেকে অনেক শিখেছি। ভুল করে থাকলে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”

রাজনৈতিক মহলের মতে, আজাদ এবং সিব্বলের এই মন্তব্যে স্পষ্ট, তাঁরা এখনও গান্ধী পরিবারের সদস্যদের চটাতে চাইছেন না। বরং তাঁদের সঙ্গেই থাকতে চাইছেন। আর শুধু এই দুজন নয়। অন্য বিদ্রোহীদেরও সুর নরম। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বিদ্রোহীদের মধ্যে একজন বলছিলেন, আমরা কংগ্রেসেই থাকব। তার জন্য দল যদি শাস্তি দেয়, মেনে নিতে রাজি আছি।

Related Articles

Back to top button
Close