চিরবিদায় “অপুর”…… স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল সৌমিত্রর কৃষ্ণনগরের বাড়ি

অভিষেক আচার্য, নদিয়া: ভগ্নপ্রায় বাড়ি। ঘর ভর্তি আবর্জনা। আবছা হয়ে গিয়েছে নেমপ্লেট। এই হচ্ছে প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বাড়ি। ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। পিতামহের আমল থেকে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা কৃষ্ণনগরে থাকতে শুরু করেন।
সৌমিত্রর পিসিমা তারা দেবীর সঙ্গে ‘স্যার’ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিয়ে হয়। সৌমিত্রর পিতৃদেব কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি করতেন এবং প্রতি সপ্তাহান্তে বাড়ি আসতেন।
পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কৃষ্ণনগরের সেন্ট জন্স বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন সৌমিত্র। পরে সৌমিত্রর স্কুলও বদল হয় এবং উনি বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করেন হাওড়া জেলা স্কুল থেকে। তারপর কলকাতার সিটি কলেজ থেকে প্রথমে আইএসসি এবং পরে বাংলা বিষয় নিয়ে বিএ অনার্স পাস করার পর দু’বছর এমএ পড়েন।
জীবনের প্রথম ১০ বছর সৌমিত্র কাটিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরে। এই শহরেই তাঁর অভিনয়ে হাতেখড়ি। পরে তাঁর পরিবার চলে এসেছিল হাওড়ায়। সৌমিত্র পড়তেন হাওড়া জেলা স্কুলে। স্কুলের অনুষ্ঠানে নিয়মিত অভিনয় করতেন তিনি। জমিয়ে রাখা পুরস্কারের পদক বাড়িয়ে দিত আরও ভাল কাজ করার খিদে।
চট্টোপাধ্যায় পরিবারের আদি বাড়ি ছিল (অধুনা বাংলাদেশে) শিলাইদহের কাছে কয়া গ্রামে। কিন্তু আজ মুখ ভার চট্টোপাধ্যায় হাউসের। লোক থাকে না। কিন্তু রয়েছে বহু স্মৃতি। যা এই বাড়ির প্রতিটা কোনায় ছড়িয়ে রয়েছে। “অপুর” মৃত্যুর খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে এই বাড়ির সামনে ভিড় জমান স্থানীয়রা। শোকের ছায়া পুরো পাড়া জুড়ে।
আরও পড়ুন: বিশ্বজয়ী বহুমাত্রিক প্রজ্ঞা সৌমিত্র
স্থানীয়রা জানান, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাড়িটি ভেঙে পড়ছে। ঘর ভর্তি কাগজ। জমে গিয়েছে ধুলো। চারিদিকে দেওয়াল খসে পড়ার চিহ্ন স্পষ্ট।
সব মায়া কাটিয়ে চলে গেলে প্রবাদপ্রতিম শিল্পী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর পৈতৃকবাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের দাবি তোলা হয়েছে।