‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’…খুঁনসুটি করার সময়ে ‘পালিত’ সিংহদের হাতেই মরতে হল আশ্রয়দাতাকে

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে…কথাটা আবারও একবার প্রমাণিত হল। বন্যপ্রাণীকে জতই লালন পালন করা হোক না কেন নিজের সন্তানের মতো করে…এক সময় গিয়ে তাঁরা প্রাণঘাতী হয়েই ওঠে। দক্ষিণ আফ্রিকায় নিজের পালিত দুই সিংহের আক্রমণেই প্রাণ হারালেন এক বন্যপ্রাণ সংরক্ষণবাদী। নাম ওয়েস্ট ম্যাথুসনের।
ম্যাথুসনের নাম বন্যপ্রাণ সংরক্ষকদের মধ্যে অতি পরিচিত নাম। মৃত্যু কালে বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তাঁকে অনেকে আঙ্কল ওয়েস্ট নামেও ডাকতেন। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ আফ্রিকার লিপোপো প্রদেশের লায়ন ট্রি টপ লজে।
জানা যায়, মা-হারা শাবক দুটিকে পরম যত্নে তুলে এনে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এতগুলো বছর ধরে যত্নের এতটুকুও অভাব হয়নি। অথচ আক্রোশের বশে দাঁত-নখ বের করে সেই আশ্রয়দাতারই প্রাণ কাড়ল দুই সিংহ। সাদা দুই সিংহকে নিয়ে রোজই হাঁটতে বেরন দক্ষিণ আফ্রিকার লিমপোপোর বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ কেন্দ্রের ওয়েস্ট। বহু বছর ধরে এটাই তাঁর রোজকার রুটিন। বুধবার সকালেও সেভাবেই দু’জনকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন প্রবীণ এই সংরক্ষক। তাঁর সঙ্গে বেশ খুনসুটিও করছিল দীর্ঘদিনের সঙ্গী দুই সিংহ। কিন্তু আচমকাই সিংহ দুটি নিজেদের মধ্যে রাগারাগি শুরু করে।
আরও পড়ুন: লাদাখে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু, মোট মৃতের সংখ্যা ২৮
ওয়েস্টকে ছেড়ে কিছুটা দূরে চলে যায়। ওয়েস্টের স্ত্রীও সেসময় আশেপাশেই ছিলেন। পরবর্তী মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী তিনি। তিনি বলেন, কিছুক্ষণ পর হঠাৎ ফিরে এসে দু’জনে মিলেই ওয়েস্টের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাঁকে ক্ষতবিক্ষত, রক্তাক্ত করে প্রাণ শেষের পর শান্ত হয় দুই সিংহ। তারপর সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
দীর্ঘদিনের সঙ্গীদের হাতে এভাবে ওয়েস্ট ম্যাথুসনকে নিহত হতে দেখে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। প্রায় একই পরিস্থিতি সংরক্ষণ কেন্দ্রের অন্যান্য কর্মীদেরও। অনেকের মতে, বয়স ৭০ ছুঁতে চললেও ওয়েস্ট এদের এতটাই ভালবাসতেন যে কাজ ছেড়ে যেতে চাননি। দুই সাদা সিংহও তাঁর বেশ পোষ মেনেছিল। তবে হঠাৎ কেন প্রভুর উপর এই আক্রোশ জন্মাল তাদের, সেই উত্তর খুঁজতে অন্ধকারে হাতড়াচ্ছেন সবাই। আবার অনেকের মতে, বয়সের কারণেই সিংহদের হিংস্রতার সঙ্গে লড়তে পারেননি ওয়েস্ট।