জিংপিঙের মন্তব্যে যুদ্ধের জল্পনা ছড়াচ্ছে কেন?

বেজিং, সংবাদ সংস্থা: আধিপত্যের প্রশ্নে আবারও ফুঁসে উঠেছে চিন। নিজ দেশের সেনাকে বিশ্বমানের গড়ে তুলতে আরও উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চাইছে চিন। এজন্য ২০২৭ সালের লক্ষমাত্রাও বেঁধে নিয়েছে বেজিং। বৃহস্পতিবার, চিনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানিয়েছেন, ‘চিনা সেনার প্রশিক্ষণের জন্য এবার নয়া নীতি প্রণয়ন করা হবে, যাতে তারা ‘বিশ্বমান’-এর সেনায় পরিণত হয়। আর এটি সম্পন্ন হবে ২০২৭ সালের মধ্যে।’ এরপরই আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়, কোন দেশকে হুঁশিয়ারি দিতে চেয়ে এমন পদক্ষেপের কথা সামনে আনলেন চিনা প্রেসিডেন্ট? যেদিন তিনি দীর্ঘ নিরবতা ভেঙে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, মার্কিন সেনা বাহিনীর সঙ্গে সমকক্ষ এক সামরিক বাহিনী তৈরির লক্ষ্যেই এগোচ্ছেন জিনপিং। এর লক্ষ্যে ক্রমেই সামরিক খাতে খরচও বাড়িয়েছে চিন। ২০১৯ সালে প্রতিরক্ষা খাতে ২৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে জিনপিংয়ের প্রশাসন। যা করোনা সংকটেও খুব একটা কমেনি। এছাড়া আরও একটি বিষয় বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে, তা হল চিনা সামরিক বাহিনীর সকল শাখাকে সম্মিলিত ভাবে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করতে আরও উন্নত কৌশলগত পরিকল্পনা এবং শীর্ষ স্তরের নকশার প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেছেন জিনপিং। যে লক্ষ্যে তিনি নয়া বিধি মেনে সেনার প্রশিক্ষণের রূপরেখা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এর আগেও দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য, বাণিজ্য-যুদ্ধ ও তাইওয়ানের স্বাধীনতার প্রশ্নে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সংঘাতের উপক্রম তৈরি হওয়ায়, রীতিমতো যুদ্ধের হুমকি দিয়েছিলেন জিনপিং। সেসময় তিনি চিনের সেনা বাহিনীকে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধের প্রস্তুতি সেরে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর মার্কিন বাহিনীর হাতে থাকা ‘মাদার অব অল বম্বস’-এর পাল্টা হিসেবে ‘দানব বোমা’ তৈরি করে চিন। যে ‘দানব বোমা’র শক্তি ও ধ্বংসলীলা চালানোর ক্ষমতা পরমাণু অস্ত্রের কাছাকাছি।
এছাড়াও, চিনা প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্য এমন এক সময় এল যখন, লাদাখে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে ভারত-চিন সেনা পর্যায়ের আলোচনা জারি রয়েছে। তাই, জিনপিংয়ের এই মন্তব্য সেনা প্রত্যাহারের উপর কতটা প্রভাব ফেলে, তার দিকে নজর রেখেছে ভারতীয় কূটনৈতিক মহল। অন্যদিকে, দক্ষিণ চিন সাগরে তাইওয়ানকে চোখ রাঙিয়েই চলেছে বেজিং। তারপরও বিশেষজ্ঞদের মত, মার্কিন যুদ্ধ ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই এই খোলস বদলের পথে হাঁটছে চিন।