ধর্মীয় গোঁড়ামিকে প্রশ্রয় দিল না শ্রীলঙ্কা

কলম্বো: ধর্মীয় গোঁড়ামিকে এক পাশে সরিয়ে রেখে করোনায় মৃত মুসলিমদের দেহ দাহ করছে শ্রীলঙ্কা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মুসলিম পরিবারগুলির প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে কঠোর পদক্ষেপ করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। ফলে করোনার চেয়েও মৃত্যু পরবর্তী পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে রাতের ঘুম উবে গিয়েছে সে দেশে বসবাসকারী মুসলিমদের।
প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কায় গত অক্টোবর থেকেই করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা হু হু করে বাড়তে থাকে। এরপরই স্বাস্থ্য মন্ত্রক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে করোনায় মৃত সকলের দেহ পুড়িয়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক বলে সিদ্ধান্ত নেয়। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের কড়া নজরদারিতেই এই কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু ইসলামি রীতিতে মৃত্যুর পর দেহ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সে দেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘু মুসলিমরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রবল আপত্তি জানান। জানা গিয়েছে, পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও করোনায় মৃত ১৯ জন মুসলিম ব্যক্তির দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
বুধবার ৫ জনের দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপে বিতর্ক। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগে দেহ নিতে অস্বীকার করেছে মৃতের পরিজনরা। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় সরকার। সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে ইতিমধ্যেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিম সমাজ এবং একাধিক বুদ্ধিজীবী সংগঠন শ্রীলঙ্কায় সুপ্রিম কোর্টে ১২টি পিটিশন দাখিল করেছে। কিন্তু শীর্ষ আদালত গত সপ্তাহেই এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। আন্তর্জান্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সদস্য রেহাম মহামুর জানান, মুসলিমদের ধর্মীয় রীতির বিরুদ্ধে গিয়ে মৃতদেহ যেভাবে দাহ করা হচ্ছে তা অন্যায়। আন্তর্জাতিক গাইডলাইনে করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ পুড়িয়ে ফেলার পাশাপাশি কবর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু শ্রীলঙ্কা সরকার এমন কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে করোনাকালে মুসলিম সমাজকে আরও একঘরে করে তুলেছে।