রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নামে প্রহসন চলছে: সুজন চক্রবর্তী
অলোক কুমার ঘোষ, ব্যারাকপুর: “কোভিড চিকিৎসার নামে রাজ্যে প্রহসন চলছে। রাজ্য সরকারের একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। বেশির ভাগ সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার নেই। কোভিড চিকিৎসার নামে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ এর প্রতিবাদ করবেই। কামারহাটি সাগরদত্ত মেডিকেল কলেজকে কোভিড হাসপাতাল কেন করা হবে? এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল উত্তর শহরতলীর হাজার হাজার মানুষ।
যত গুলো সরকারি হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা চলছে, সব জায়গায় স্বাভাবিক চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। এখানকার মানুষ জানতে চাইতেই পারে কামারহাটি সাগরদত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সম্পর্কে, তাই বলে শাসক দলের গুন্ডা বাহিনী পুলিশের সামনে তাদের মারবে? আমাদের দলের নেতা, কর্মীরা সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেছে বলে তাদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করল। গণতন্ত্রে এই ঘটনা চলতে পারে না। এখানে কোভিড রোগিদের যথাযথ পরীক্ষা হচ্ছে না। সুস্থ মানুষকে অসুস্থ করে ফেলা হচ্ছে । টেস্ট করার পরদিন যাকে নেগেটিভ বলা হচ্ছে, দুদিন পরেই সে কি করে পজিটিভ হচ্ছে ? রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সংকটের মুখে পড়েছে ।” বললেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ।
উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটিতে দলীয় দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা বলেন সুজন চক্রবর্তী। কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে সাধারন মানুষের উপর দুষ্কৃতী হামলার ঘটনায় বেলঘরিয়া থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জে জখম হন বেশ কয়েকজন বাম ও কংগ্রেস কর্মী। এমনকী সোমবার রাতে সেই ঘটনার সময় পুলিশের লাঠির বাড়ি পড়ে স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়ের পায়েও। তারই প্রতিবাদে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বাম শীর্ষ নেতৃত্ব কামারহাটির রথ তলা এলাকায় দলীয় দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন। কামারহাটির সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের উপর লাঠি চার্জ করেছে সিভিক ভলান্টিয়াররা।
ওদের আইন শৃঙ্খলার কাজে নামানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানাব। আমি কামারহাটি সাগরদত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সম্পর্কে নিজে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছি এই হাসপাতালে কোভিড ইউনিট বিচ্ছিন্ন অংশে ২০০ বেডের চালু করা যেতে পারে, বাকি ৩৩৬ বেড সাধারণ রোগের চিকিৎসার জন্য ছেড়ে দিতে হবে ।”
সব হাসপাতাল যদি কোভিড রোগের চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়, তবে সাধারণ গরীব মানুষ কোথায় যাবে ? কত লোক চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে এখন মারা যাচ্ছে । এর দায় সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের ।” কামারহাটির রথ তলায় বাম শীর্ষ নেতাদের এই মিটিংয়ে সুজন চক্রবর্তী, মানস মুখোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উত্তর দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিএম বিধায়ক তন্ময় বন্দোপাধ্যায়, গার্গী চট্টোপাধ্যায়, পলাশ দাস সহ অন্যান্যরা।