
যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: আমার পদ নিতে অনেকেই আমার মৃত্যু চাইছেন। কিন্তু আমার মৃত্যু তো উপরওয়ালার হাতে, আমার হাতে নেই। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন আক্ষেপ করেছেন বলে খবর। আবেগতাড়িত হয়ে তখন সুব্রত বক্সি বলেন,’না, দিদি আপনি বাঁচুন। আপনি বাঁচলে বাংলা বাঁচবে।’
অন্দরের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বৈঠকের মাঝে উত্তেজিত হয়ে বলে ওঠেন ”কেউ কেউ আমার জায়গাটা নিতে চাইছে। সেটা তো আমার মৃত্যুর পরেই সম্ভব। অর্থাৎ সে আমার মৃত্যু কামনা করছে। কিন্তু আমার মৃত্যু তো আমার হাতে নেই, ঈশ্বরের হাতে।” দলনেত্রীর এই বক্তব্য শোনার পর নিজেকে আর সামলে রাখতে পারেননি দলের রাজ্য সভাপতি তথা বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত বক্সি । তিনি নিজের ভাষণ দিতে উঠে কেঁদে ফেলেন। কান্নাভেজা গলাতেই বলেন, ”আপনি কখনও এমন কথা বলবেন না। আপনি থাকবেন। আপনি শতায়ু হবেন। আমরা কেউ আপনার মৃত্যু কামনা করি না। দীর্ঘ আন্দোলনের অভিজ্ঞতা আপনার। সেই লড়াইয়ে আমরা সঙ্গে আছি আপনার। আপনার নেতৃত্বে বাংলা ভাল আছে। আপনিই আমাদের পথ দেখাবেন। আপনার নেতৃত্বে আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।” তাঁকে এভাবে ভেঙে পড়তে দেখে মমতাও খানিক থমকে যান। তারপর সুব্রত বক্সিকে আশ্বস্ত করে জলের গ্লাস এগিয়ে দেন। বলেন, ”আপনি কাঁদবেন না। শান্ত হোন।” তাতে কিছুটা কাজ হলেও, বৈঠকের বাকি সময়টা সুব্রত বক্সিকে খুবই বিমর্ষ লাগছিল বলে ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনাসভায় কিছুটা আবেগতাড়িত হয়ে এই মন্তব্য করেন মমতা। সেই সঙ্গে বলেন, ‘ট্রাম্পের মতো পতন হবে অহংকারীর।’নামোল্লেখ না করলেও, নেত্রীর ভবিষ্যদ্বাণী যে বিতর্কের মধ্যমণি শুভেন্দু অধিকারীকে লক্ষ্য করেই, তা আন্দাজ করছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। জানা গিয়েছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নেতাদের একাধিক দায়িত্বপূর্ণ পদ থেকে সরানোর নির্দেশ ইতিমধ্যে দিয়েছেন স্বয়ং নেত্রী।
সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরে সংগঠন ভোটের আগে গুছিয়ে নিতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কারণে এ দিন নাম না করে শুভেন্দু অনুগামীদের সরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। এ দিন জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীকে মমতার নির্দেশ, দলে থেকে যাঁরা দলের বিরোধিতা করছেন, সরিয়ে দিন। শুধু কথার কথা নয়। মমতা জানিয়ে দেন,’নন্দীগ্রাম, নন্দকুমারের ব্লক প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দেওয়া হোক। সুব্রত বক্সির সঙ্গে আলোচনা করে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিন।’ এর পাশাপাশি তাঁর বার্তা, এজেন্সির ভয় দেখানো হচ্ছে। যাঁদের সাহস আছে আমাদের সঙ্গে থাকুন।