
অভিষেক গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সাংগঠনিক পদে বড় ধরনের রদবদল ঘটিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার ফের একবার দলের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হল দক্ষিণ কলকাতার চেয়ারম্যানের পদ থেকে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে সরিয়ে নতুন চেয়ারম্যান পদে অভিষেক ঘটানো হলো মণীশ গুপ্তর। তৃণমূল কংগ্রেসে জেলা পর্যবেক্ষকের পদটিই তুলে দিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বদলে ‘চেয়ারম্যান’ পদটি তৈরি করা হয়েছে। এদিকে, নতুন গঠিত হয়েছে ‘চেয়ারম্যান’ পদটি।
যদিও দলীয় নেতারা বলছেন, ওই পদের তেমন কোনও গুরুত্ব নেই।আসল ক্ষমতা থাকবে জেলা সভাপতির হাতেই।তবে ভোটের আগে তৃণমূলনেত্রী কারও কোনও অসন্তোষ রাখতে চান না। তাই আলঙ্কারিক পদ দিয়ে রাখা হল নদিয়ায় উজ্বল বিশ্বাস, কোচবিহারে বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, পুরুলিয়ায় শান্তিরাম মাহাতোদের। বীরভূমের আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর ২৪ পরগনায় নির্মল ঘোষদের মতো প্রভাবশালী নেতাদেরও দেওয়া হল চেয়ারম্যানের পদ।
শুক্রবার দলের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার ভুল করে দক্ষিণ কলকাতার জেলা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানে মণীশ গুপ্তর নাম হবে। অর্থাৎ দক্ষিণ কলকাতার জেলা কমিটির নতুন চেয়ারম্যান হলেন মণীশ গুপ্ত।
প্রসঙ্গত, চেয়ারম্যান নামক একটি নতুন পদ গঠন করেছে রাজ্যের শাসক দল। সেখানে উত্তর কলকাতার চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কে। উত্তর ২৪ পরগনার চেয়ারম্যান করা হয়েছে পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ কে। এবং দার্জিলিং জেলার চেয়ারম্যান হয়েছেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব।
তৃণমূলের শহীদ স্মরণ এর মঞ্চ থেকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এবারে প্রাচীরের সরিয়ে তুলনামূলক নবীনদের নিয়ে দল গঠন করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তার অবর্তমানে জাতের দল চালিয়ে নিয়ে যেতে অসুবিধা না হয় সেজন্য নতুনদের এখন থেকেই তৈরি করতে চান তিনি। তাই গতকালের সাংগঠনিক বৈঠক বিভিন্ন পদের রদবদল করে অপেক্ষাকৃত তরুণ মুখদের সামনে নিয়ে এলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। পর্যবেক্ষকদের মতে, নবীনদের কান্ডারী করেই আসন্ন বিধানসভা ভোটে নিজেদের আধিপত্য কায়েম রাখতে চায় রাজ্যের শাসক দল।
বৃহস্পতিবার দলে বড়সড় সাংগঠনিক রদবদল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে জেলা পর্যবেক্ষকের পদটিই তুলে দিয়েছেন তিনি। এদিন ওই পদ থেকে সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিমদের অব্যহতি দিয়েছেন নেত্রী। পরিবর্তে একটি রাজ্যস্তরের স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করেছেন। যে কমিটিতে সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শান্তা ছেত্রীকে রাখা হয়েছে। এই কমিটিতে অরূপ বিশ্বাসের নাম নেই।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ লোকসভায় বিজেপির ভাল ফলের পর গত প্রায় এক বছর ধরে মমতা নিজে দলের নেতানেত্রীদের মূল্যয়ন করেছেন। আর নেত্রীর মূল্যয়নে যারা যারা পাশ করতে পারেনি তাঁদের হয় পুরোপুরি সরে যেতে হয়েছে নাহয় ক্ষমতা কমানো হয়েছে।