সবার সামনে সিঁথিতে সিঁদুর দেওয়ায় লজ্জায় আত্মঘাতী কেতুগ্রামের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রী, গ্রেফতার প্রতিবেশী যুবক

দিব্যেন্দু রায়, কাটোয়া: বিসর্জনের আগে দুর্গা প্রতিমা বরণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন পাড়ার মহিলারা। তাঁদের মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল দ্বাদশ শ্রেনীর এক ছাত্রী। সেইসময় সকলের সামনে ওই ছাত্রীর সিঁথিতে ও মুখে সিঁদুর লাগিয়ে দেয় প্রতিবেশী যুবক। সেই লজ্জায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কেতুগ্রাম থানার বিল্লেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা ১৭ বছরের ওই কিশোরী। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় মৃতার দাদা অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বাবুসোনা দাস(২২) নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার ধৃতকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ধৃতকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মৃত নাবালিকারা এক ভাই ও এক বোন। সে ছোট। মেয়েটি বিল্লেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে কলাবিভাগে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার বিকেলে। ওই দিন বিল্লেশ্বর গ্রামের দাসপাড়ার সার্বজনীন দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন ছিল। পাড়ার মহিলারা প্রতিমা বরণের জন্য রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। তাঁদের মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল ওই কিশোরী। সেইসময় বাবুসোনা সেখানে গিয়ে সকলের সামনে কিশোরীর মাথা ও মুখে সিঁদুর লাগিয়ে দেয়। তখন মেয়েটি লজ্জায় ছুটতে ছুটতে বাড়ি চলে আসে। এর কিছুক্ষনের মধ্যেই দু’তলা বাড়ির উপর তলার শিড়ির চাল থেকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন- মানসিক অবসাদের জেরে আত্মহত্যা প্রাক্তন অধ্যাপকের
পরিবারের লোকজনের নজরে পড়লে কিশোরীকে উদ্ধার করে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন। কিন্তু বুধবার ভোরে বর্ধমানে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয় মেয়েটির।
মৃতার দাদার অভিযোগ, “বছর পাঁচেক আগে আমার বোনের সঙ্গে বাবুসোনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। আমরা জানতে পারার পর বোনকে বোঝাই। তখন বোন নিজে থেকে ওই সম্পর্ক থেকে সরে আসে। কিন্তু ওই ছেলেটি যে এই ঘটনা ঘটিয়ে দেবে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। ওর এই আচরনের জন্য আমি আমার বোনকে হারালাম। আমরা চাই অভিযুক্ত যুবকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হোক।”
জানা গেছে, বুধবার সৎকার পর্ব সমাপ্ত হওয়ার পর বাবুসোনা দাসের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার দাদা। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই দিন রাতেই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে। এদিন ধৃতকে আদালতে তোলা হয়।