‘যাঁরা আমাকে ব্যক্তি আক্রমণ করছেন, চটঘেরা জায়গায় আঙুল টিপলেই জবাব পাবেন’, বিস্ফোরক শুভেন্দু

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: যে কোনও দিন তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি। তার প্রাক মুহূর্তে মঙ্গলবার যেন সেই আবহই তৈরি করতে চাইলেন রাজ্য রাজনীতির অন্যতম দাপুটে নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশ সামন্তের ১২১তম জন্মদিনের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে শুভেন্দু প্রশ্ন তোলেন, ভারতবর্ষের মধ্যে কোনও ভারতীয় বহিরাগত হয় কী করে? আমরা ভাল কাজের জন্য লড়বো। দেশমাতৃকাকে বন্দন করবো। আমরা প্রথমে ভারতীয়, তার পরে বাঙালি।
এদিনও শুভেন্দুর সভায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশ সামন্তকে স্মরণ করে শুভেন্দু বলেন, ভারতে একমাত্র জাতীয় সরকার টিকেছিল তাম্রলিপ্তে। সেই আন্দোলনেরই ছোট সংস্করণ ছিল নন্দীগ্রাম। সতীশ সামন্তের অবদানকে স্মরণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘রাজনৈতিক মত – পথের যাই পরিবর্তন ঘটুক না কেন, যে স্থিতাবস্থাই থাকুক না কেন, যে ভাবে যে পদেই আমরা থাকি না কেন, আমাদের সব থেকে বড় পরিচয় কী? আমরা প্রথমে ভারতীয় তার পরে বাঙালি’। হলদিয়ায় তাঁর স্মরণসভায় দাঁড়িয়ে শুভেন্দু এদিন বলেন, ‘ব্যক্তি আক্রমণে আমি বিশ্বাস করি না। কেউ কেউ আমাকে ব্যক্তি আক্রমণ করছেন ঠিকই। তাঁরা অনেকে উচ্চ পদে রয়েছে।’ এ কথা বলেই স্বর আরও কয়েক দাগ চড়িয়ে দেন শুভেন্দু। বলেন, ‘আপনারা বুঝতে পারবেন…। আর কদিন বাদেই জনগণ যখন ওই চটঘেরা জায়গায় যাবেন। আর ঠিক জায়গায় বোতাম টিপবেন। দেখবেন, আপনাদের অবস্থা লক্ষ্মণ শেঠ, অনিল বসু, বিনয় কোঙারদের মতই হবে।’
১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামের সভা থেকে নাম করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু। সে দিন নন্দীগ্রামে পাল্টা সভা করেছিল দল। নাম করে না করে শুভেন্দু মীরজাফর বলেছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর দলের প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত তাঁর উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে আলু বেচতিস।’ অনেকের মতে, তাঁদের উদ্দেশ করেই এ দিন কড়া কথা শুনিয়েছেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা। তবে কল্যাণ বা ববির নাম মুখে আনেননি শুভেন্দু। কিন্তু বলেন, ‘একটা কথা বলে যেতে চাই, শুভেন্দু অধিকারী পদের লোভ করে না। অনেকে বলছিলেন পদ দেখিয়ে লোক আনছে। পদ ছাড়ুক, তার পর দেখব ক’জন লোক থাকে ওঁর সঙ্গে। তাই সই। ২৭ নভেম্বর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছি। সমস্ত সরকারি পদ ছেড়ে দিয়েছি…।
আরও পড়ুন: কৃষক আন্দোলনের মাঝেই গুজরাটে এই প্রথম কৃষকদের সঙ্গে মুখোমুখি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
‘বলেন, ‘আমরা ভাল কাজের জন্য লড়বো। দেশমাতৃকাকে বন্দন করবো। বেকার যুবকের কর্মসংস্থান, কৃষকের অধিকার আর মিলেমিশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই হবে আমাদের একমাত্র মত আর পথ’।’এই যে এত মানুষ এসেছেন, তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য আসেননি। তাঁরা বিজেপির জন্য আসেননি বা সিপিএমের জন্য আসেননি। এঁদের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক। সারা বছর এঁদের সঙ্গে থাকি। শুধু ভাষণ দিই না, এঁদের রেশনের জন্য কথা বলি।’পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, শুভেন্দুর এদিনের বক্তৃতা থেকে কতগুলি বিষয় পরিষ্কার। তা হল, তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়লেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তি আক্রমণ হয়তো এড়িয়ে চলতে চাইবেন তিনি।