fbpx
কলকাতাবিনোদনহেডলাইন

‘আমার গা, আমার ব্রা, আমার স্ট্র্যাপ.. আমি সেটাকে বের করব, না সাজিয়ে রাখব একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার’, অকপট স্বস্তিকা

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: এবার অন্যরকম ভূমিকায় নজর কাড়তে চলেছেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। পরিচালক সুদীপ্ত রায়ের ‘তাসের ঘর’। আর সেখানেই পুরোদস্তুর ছাপোষা বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারণ গৃহিনী ‘সুজাতার’ চরিত্র দর্শকদের সামনে নিজেকে মেলে ধতে চলেছে অভিনেত্রী। তবে ‘তাসের ঘর’-এর পোস্টার মুক্তি পাওয়ার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিংয়ের শিকারও হতে হয়েছে তাঁকে।

লকডাউনে প্রত্যেক গৃহিণীর যা অবস্থা হয়েছে, ‘তাসের ঘর’-এর সুজাতাও ঠিক সেরমই একটা গল্প বলবে। বাস্তবের সঙ্গে মিল খুঁজে পাবেন দর্শকরা। সুজাতা এমন একটা চরিত্র যে সারাদিন রান্নাঘরে ডুবে থাকতেই ভালবাসে। গাছ পরিচর্যা করতে ভালবাসে। আবার একাকীত্বও ভালবাসে। যাঁদের কাছে সংসারটাই একমাত্র জগৎ, তাঁরাও প্রতিনিয়ত নিজেদেরকে খুঁজে চলেছে। আর আমরা যাঁরা বাইরেই বেশি সময় কাটাই, সংসারে অত মন দিতে পারিনা, তাঁরাও কোথাও একটা নিজেকে খুঁজছি। তবে সেদিক থেকে সুজাতা অন্যরকম। নিজের সংসারের ভিতরেই নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতে চায় সুজাতা।

‘তাসের ঘর’-এর পোস্টার ঘিরে অশ্লীল, কদর্য মন্তব্য করা হয়েছিল স্বস্তিকার উদ্দেশে, সেই প্রসঙ্গে বললেন, ভেবেছিলাম, সারা বিশ্বজুড়ে এই অতিমারীতে হয়তো মানুষের মন-মানসিকতা একটু বদলাবে। কিন্তু কোথায় আর, সেই যে-কে সেই! পালটেছে। তবে উন্নতি হয়নি, বরং অবনতি হয়েছে। ওর বুক, ব্রায়ের স্ট্র্যাপ, তার জাঙিয়া, হাফপ্যান্ট.. এসব নিয়ে বলে চলেছে। আমার গা, আমার ব্রা, আমার স্ট্র্যাপ.. আমি সেটাকে বের করব, না সাজিয়ে রাখব, না কী করব! সেটা একান্ত আমার ব্যক্তিগত বিষয়।

আমি বুঝি না সমস্যা কোথায়! লোকের কি অজানা যে মহিলারা ব্রা পরে? সমাজ যদি না পরার অপশন দেয়, তাহলে আমরাই সবার আগে বেঁচে যাই। একটা অন্তর্বাস পরে ২৪ ঘণ্টা কাটানো বরং আনহেলথি। একটা সিগারেট খেলে চিন্তা বেড়ে যায় যে, ফুসফুসের ক্যানসার হবে! তো সারাক্ষণ টাইট ব্রা পরে স্তন ঢেকে রাখা থেকেও তো ব্রেস্ট ক্যানসার হতে পারে। কোথায় সেটা নিয়ে তো চিন্তা দেখি না! হঠাৎ একটা ছবির পোস্টার দেখে মানুষ এমন শুরু করল যেন, আমাকেই নারী হিসেবে প্রথম ব্রা পরতে দেখেছে!

আরও পড়ুন: কথা কোয়োনাকো -গীতিকার অমিয় বাগচী

কারও হয়তো চেহারা জিরো সাইজ নয়। আমার মতো চেহারা। আমারও তো কুড়িটা সেলফি তুললে একটা পাতে দেওয়ার মতো হয়। আমার মতো এরকম অনেকেই রয়েছেন, যারা ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল সম্পর্কে পারদর্শী নন। কেউ হয়তো একটা শাড়ি পরে নিজের ইচ্ছেমতো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন। তারপর দুশোজন লোক এসে তাঁকে তাঁর শরীর নিয়ে, পেছন নিয়ে, তাঁর বুক নিয়ে কদর্য কমেন্ট করে তাঁর আত্মবিশ্বাসটাকে ধ্বংস করে দিল। কেউ চাইলেই তাঁর নাচের কিংবা শিল্পের সমালোচনা করতে পারেন, তাতে কারও মনোক্ষুণ্ণ হবে না! “কিন্তু আপনি এরকম শরীর নিয়ে কেন নাচছেন? আপনার বুক ঝুলে গেছে, সেটা নিয়ে কেন নাচলেন? কেন এক্সারসাইজ করে মেদ কমাচ্ছেন না!…” এরকম হাজারও কদর্য মন্তব্য করা শুরু করা হয়। সবার তো আমার মতো মনের জোর না-ও থাকতে পারে। এই মানসিকতা আরও দশজন মহিলার না-ও থাকতে পারে। তাই তাঁদের বলব, নেগেটিভি থেকে দূরে থাকতে একটু বেছে, ভেবেচিন্তে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন।

‘তাসের ঘর’ নিয়ে প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, লকডাউনে আমাদের জীবনযাত্রা অনেকটাই বদলেছে। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা করতে পারছি না, পার্টি করতে পারছি না! এরকম একটা পরিস্থিতিতে নেগেটিভিটি থেকে যতটা দূরে থাকা যায়, ততটাই মঙ্গল। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া। আমাদের কাছে যে উপায়টা নেই। আমরা যা কাজ করছি, সেটা রিলিজ হচ্ছে ডিজিটালি। প্রমোশনও হচ্ছে ডিজিটালি। কারণ, মানুষের কাছে কাজ তুলে ধরার এখন একমাত্র প্ল্যাটফর্ম সোশ্যাল মিডিয়া। তাই এটা থেকে পালানোর কোনওরকম রাস্তা নেই তারকাদের। কিন্তু যাদের সেই উপায় রয়েছে, তাঁদের বলব, একটু ফিল্টার করেই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা ভাল। কারণ অনেকেই এতে ভীষণরকম অ্যাফেক্টেড হচ্ছে।

 

 

Related Articles

Back to top button
Close