কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তাড়াল তালিবান, প্রতিবাদে ইস্তফা সত্তর অধ্যাপকের

নিজস্ব প্রতিনিধি: ভাল বা খারাপ তালিবান বলে কিছু হয় না। তালিবান আছে সেই তালিবানেই, সেটা প্রতিনিয়ত বুঝিয়ে দিচ্ছে তারা। স্কুল-কলেজে কো-এডুকেশন বাতিলের পরে এবার উপাচার্যকে বরখাস্ত করল তারা। আর তালিবান সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফের সরব হল কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মহম্মদ ওসমান বাবুরিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের পদ থেকে বরখাস্ত করে বুধবার তালিবান ঘনিষ্ঠ মহম্মদ আশরফ ঘইরতকে বসানো হয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইস্তফা দিতে শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা।
একটি আফগান সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তালিবান সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সত্তর জন অধ্যাপক পদত্যাগ করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বিভাগীয় প্রধান। তাঁদের অভিযোগ, পিএইচডি ডিগ্রিধারী বাবুরি’কে অন্যায় ভাবে সরানো হয়েছে। তুলনায় কম যোগ্যতার কলা বিভাগের স্নাতক ঘইরতকে নিয়োগ করে ঐতিহ্যশালী কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাহানি করা হয়েছে। এই দাবি করে তালিবানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তাঁরা। যদিও তালিবানের দাবি, ঘইরতকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব হয়েছে। স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হয়নি। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনির জমানায় আফগানিস্তান সরকারের শিক্ষা দফতরের মাঝারি স্তরের আধিকারিক ছিলেন ঘইরত। সে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ইসালামি শিক্ষা প্রসারের দায়িত্ব থাকাকালীন তালিবানের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক তৈরি হয়।
তালিবান জমানায় আফগানিস্তানের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী হয়েছেন হক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা আব্দুল বাকী হক্কানি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘জঙ্গি তালিকা’য় নাম রয়েছে তাঁর। হক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজুদ্দিন হক্কানির ঘনিষ্ঠ বাকী হক্কানি দায়িত্ব পেয়েই দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পোশাকবিধি চালু করেছেন। মেয়েদের বোরখা পরা বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি কো-এডুকেশন বন্ধ করা হয়েছে। আর সমস্ত শ্রেণিতে ধর্মপাঠ শিক্ষা বাধ্যমূলক করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে সঙ্গীতশিক্ষাকে।