কলকাতায় উর্দ্ধমুখী পারদ, পাঁচ জেলায় অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, উত্তরবঙ্গে ধসের আশঙ্কা

যুগশঙ্খ ডিজিটাল ডেস্ক: অস্বস্তির গরমে হঠাৎ করেই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে নাজেহাল দক্ষিণবঙ্গ। ক্রমেই বাড়ছে আর্দ্রতার পরিমাণ। আর তার জেরেই হাসফাঁস পরিস্থিতি গোটা রাজ্য জুড়ে। এদিকে, এরইমধ্যে খানিকটা স্বস্তি দিয়ে বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। শুক্রবার উত্তরবঙ্গে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। রবিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি চলবে উত্তরবঙ্গে বলে খবর মিলছে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়িতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টি হতে পারে মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুরেও।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মৌসুমি অক্ষরেখার পূর্বভাগ সিকিম ও উত্তরবঙ্গের উপর অবস্থান করছে। তার জেরে যেমন বৃষ্টি হচ্ছে, তেমনই প্রচুর পরিমাণ জলীয় বাষ্প উঠে আসছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে। এর ফলে বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাত জারি থাকবে শুক্রবার পর্যন্ত। এর প্রভাবে দক্ষিণা বাতাসে ভর করে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয়বাষ্প ঢুকছে। বঙ্গোপসাগর থেকে আসা এই জলীয়বাষ্প প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টি হবে আসাম, মেঘালয়, সিকিম ও উত্তরবঙ্গে। তবে অতি ভারী বৃষ্টি হবে সিকিম ও উত্তরবঙ্গে। ইতিমধ্যে নদীগুলিতে জলস্ফীতি দেখা গিয়েছে। যা চিন্তায় রাখছে এলাকাবাসীদের। আপাতত এই বর্ষা সক্রিয় থাকবে বলে জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস। শুক্রবার অতি ভারী বৃষ্টি দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে। ধ্বসের সতর্কতাও রয়েছে। অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে। ভারী বৃষ্টি হবে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি জেলায় শনিবারের পূর্বাভাস। রবিবারেও দার্জিলিং সহ ৫ জেলাতেই ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গে অস্বস্তির গরম অব্যাহত। এদিকে, কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলার তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রির আশপাশ দিয়ে যাচ্ছে। আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার অস্বস্তি প্রবল।কলকাতায় এদিনও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, সেই বৃষ্টিতে তপ্ত মাটি কতটা ভিজবে তা নিয়ে সন্দেহ! কলকাতা সংলগ্ন বাকি জেলাতেও হালকার দিকে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।দক্ষিণবঙ্গেও রবিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুত্-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা। বিক্ষিপ্তভাবে কয়েক জায়গায় দু-এক পশলা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমানের মত পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে।
আরও পড়ুন: প্রয়াত কলকাতা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি প্রতীক প্রকাশ ব্যানার্জি
এদিকে এক যুগে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় জুন মাসে। এমন বৃষ্টি গত ১২ বছরে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় হাওয়া অফিস। এই সময়ে স্বাভাবিকের থেকে ১৮ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম—চারটি অঞ্চলে বাড়তি বৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি এবছর মধ্য ভারতও পেয়েছে ভারী বর্ষন। ভালো বৃষ্টি হওয়ায় উপকার হয়েছে কৃষকদেরও। খরিফ শস্যের বীজ বপনের তথ্যে নজর রাখলে দেখা যাবে এই মরশুমে ইতোমধ্যে ৩১৫.৬ লাখ হেক্টর জমিতে চাষের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ধানের বীজ বপন স্বাভাবিকের চেয়ে ৫.৭ লাখ হেক্টর বেশি হয়েছে। পিছিয়ে নেই ডাল, তেলের বীজ এবং তুলোর চাষও।জুন মাসের বর্ষার ভালো স্কোরকার্ডের জন্যে শুধুমাত্র ফসলের ক্ষেত্রে সুবিধে হয়েছে তা নয়, সারা দেশে বাড়তি জল সংগ্রহ করে রাখা সম্ভব হয়েছে। এই মুহূর্তে সারা দেশের মোট ১২৩টি গুরুত্বপূর্ণ জলাধারে ১৯৪ শতাংশ জল সংগ্রহ করে রাখা আছে।