পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার বিষয়ে সর্বদলীয় সিদ্ধান্ত রসপুরে
আসাদ মল্লিক, হুগলি: শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু হওয়ায় পর থেকে গ্রামে ফিরে আসছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। তাঁদের নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা যাচ্ছে, ফলত যাতে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয়, তার জন্যে সর্বদলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হল আমতা-১ ব্লকের রসপুর পঞ্চায়েত এলাকায়।
বুধবার ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের বৈঠক হয়। তাঁদের বক্তব্য, পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফিরে কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন যাতে না হতে হয়, তার জন্যে সর্বসম্মতিতে নীতি তৈরি করা হয়েছে।
রসপুর পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের সবকটি তৃণমূলের দখলে। রসপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়ন্ত পোল্যে জানান, ‘‘কর্মসূত্রে বাইরের রাজ্যে থাকা আমাদের পঞ্চায়েতের মানুষরা ফিরছেন। নিয়মানুযায়ী জেলা স্বাস্থ্য দফতর তাঁদের পরীক্ষা করবে। তাঁদের কোয়ারেন্টাইনের দিকটি দেখা হবে। প্রশাসন দেখবে যাতে তাঁরা বাড়ি ফিরে কোনও বাধার মুখোমুখি না হন। আমরা সব দলের প্রতিনিধিরা মিলে গ্রামবাসীদের সচেতন করার চেষ্টা করব।’’
করোনা আতঙ্কের মাঝে ভেদাভেদ ভুলে সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব এনেছে তৃণমূলই। পঞ্চায়েত অফিসের বৈঠকে হাজির থাকার জন্য স্থানীয় বিজেপি ও সিপিএম নেতৃত্বকে চিঠি দেওয়া হয়। বিজেপির উলুবেড়িয়া উত্তর ১ নম্বর মণ্ডল কমিটির সহ-সভাপতি শক্তি মালিকের কথায়, ‘‘করোনা রুখতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতেই হবে। দলের পক্ষ থেকে আমি বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করি।’রসপুর পঞ্চায়েত এলাকার সিপিএমের আমতা ১ নম্বর অ্যারিয়া কমিটির সম্পাদক আনন্দ মাজিও বৈঠকে যোগ দিয়ে সর্বদলীয় ঐক্যের বার্তা দেন।
জয়ন্তবাবু জানান, রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে একজোটে নজরদারি চালানো হলে মদত দেওয়ার জায়গাই থাকবে না।’
শক্তিবাবু জানিয়েছেন, ‘‘করোনা নিয়ে রাজনীতি করার কোনো কথাই নেই। ’’ আনন্দবাবুও সমর্থন করে জানান, ‘‘এই পঞ্চায়েতে একসময়ে আমরা টানা ক্ষমতায় ছিলাম। ক্ষমতা যাবে, আসবে কিন্তু মানুষ থাকবে। তাই মানবতাকে রক্ষা করার জন্য করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাজনৈতিক ভেদাভেদ রাখা সমীচীন নয়। বেঁচে থাকলে রাজনীতি করা যাবে’।’’
রাজনৈতিক মহলের সূত্রে খবর, রসপুরে সঙ্কটের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের একজোট হয়ে লড়াইয়ের ইতিহাস আছে। ফলত অতীতে বহু রাজনৈতিক সংঘর্ষ এড়ানো গিয়েছে। রসপুরের পরম্পরা বজায় রেখেই রাজনৈতিক দলগুলি এক ভয়ঙ্কর ভাইরাসের বিরুদ্ধে যৌথভাবে লড়াইয়ে নামছে, একসুরে এমনটাই জানিয়েছেন শক্তিবাবু, আনন্দবাবু ও জয়ন্তবাবু। এমনতর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্য ও জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকরা।