শরণানন্দ দাস, কলকাতা: বিজেপির শহিদ কর্মীদের জন্য তর্পণ অনুষ্ঠানে বাধা পেয়ে তৃণমূল সরকারকে হিন্দু বিরোধী আখ্যা দিয়ে গঙ্গায় বিসর্জনের ডাক দিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। ঘটনা হলো গতবছরের মতো এ বছরও বাগবাজার গঙ্গার ঘাটে বুধবার তর্পণের আয়োজন করেছিল রাজ্য বিজেপি। করোনার জন্য ভিড় এড়াতে মহালয়ার ভোরের পরিবর্তে আগের দিন শহিদ কর্মীদের শ্রদ্ধা জানাতে তর্পণের আয়োজন করে গেরুয়া শিবির। কিন্তু পুলিশ অনুষ্ঠানের অনুমতি নেই জানিয়ে মঙ্গলবার রাতেই মঞ্চ ভেঙে দেয়।
বুধবার সকাল থেকেই বাগবাজার গঙ্গার ঘাটে যাওয়ার সব রাস্তা ব্যারিকেড করে দেয় পুলিশ। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয় যাতে কেউ বাগবাজার ঘাটে যেতে না পারেন। এরই মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩২ টি শহিদ পরিবারের পরিজনরা উপস্থিত হন। আসেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সহ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, রাজ্য বিজেপির সহসভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ প্রচুর কর্মী, সমর্থক। কিন্তু পুলিশি বাধায় বাগবাজার ঘাটে না যেতে পারলেও ঢিল ছোড়া দূরত্ব গোলাঘাটে বিজেপি কর্মীরা তর্পণ করেন।
বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা এই ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, ‘ এই সরকার হিন্দু বিরোধী। হিন্দু সংস্কৃতির বিরোধী। তা নাহলে তর্পণের মতো আবেগের অনুষ্ঠানে কেউ বাধা দেয়? তর্পণে পিতৃপুরুষকে জলদান করা হিন্দুদের ধর্মীয় রীতি। এই হিন্দু বিরোধী সরকারকে গঙ্গায় বিসর্জন দিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘ আট হাজার পুরোহিতকে ভাতা দেওয়া যে চমক ছাড়া আর কিছুই নয় সেটা আজকের ঘটনায় প্রমাণিত। তর্পণ করানো তো পুরোহিতদেরই কাজ। আর সে কাজে বাধা দিল তৃণমূল। আমরা রাজ্য সরকারের এই ভূমিকায় তীব্র নিন্দা করছি।’
আরও পড়ুন: ‘আগামী বছর ক্ষমতায় এসে মহালয়ার পুণ্য প্রভাতে তৃণমূলের তর্পণ করব’, মন্তব্য দিলীপ ঘোষের
রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় রাজ্য সরকারের এদিনের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, ‘ গত একবছরে ১০০ র বেশি কর্মী তৃণমূলের রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছেন। হিন্দু শাস্ত্রমতে অপঘাতে যাঁদের অকালমৃত্যু হয়, চতূর্দশীতে তাঁদের আত্মার শান্তি কামনায় তর্পণ করা হয়। অথচ মমতাজির রাজত্বে বিজেপি কর্মীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো যাবে না। এরচেয়ে লজ্জার কিছু হতে পারে না। আমরা পুলিশি বাধা অতিক্রম করতে চাইলে করতে পারতাম কিন্তু আমরা তর্পণের অনুষ্ঠানে অশান্তি চাইনি।’ মুকুল রায় বলেন, ‘ কেউ কখনো শুনেছে তর্পণ করার জন্য অনুমতি লাগে?’