মালদার ভেসেল ডুবির ঘটনায় শুরু রাজনৈতিক তরজা, প্রশাসনিক বেনিয়মের অভিযোগ বিজেপির

মিল্টন পাল, মালদা: মালদার ভেসেল ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিন। এখনও নিখোঁজ সাতটি লরি। উদ্ধার করা হয়েছে একটি লরি। দীর্ঘদিন ধরে এই ঘাট দিরে লরি পারাপার করলেও প্রশাসনিক কোনও নিয়ম মানা হয়নি। যার ফলে মালদার মানিকচকে লঞ্চ ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী জেলা প্রশাসন দাবি বিজেপির। পাল্টা তাদের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে দাবি তৃণমূলের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজরা হলেন মন্টু সেখ (৩৪) ময়না সেখ (৪০) তারক কুমার যাদব(৬০)। এনডিআরএফ উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে। ডুবুরি নেমেছে।
উল্লেখ্য, ঝাড়খন্ড রাজ্যের সাহেবগঞ্জ থেকে পণ্যবাহী ভেসেলটি মালদার মানিকচকের গঙ্গা ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ভেসেলটিতে দশটি পাথর বোঝাই লরি ছিল। মানিকচক গঙ্গা ঘাটে পৌঁছালে একটি লরি নামতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে জলে পড়ে যায়।এই সময় ভেসেলটিও একদিকে কাত হয়ে গেলে পাথর বোঝাই লরিগুলিও একে একে গড়িয়ে জলে পড়তে থাকে। ভেসেলটিও ভারসাম্য হারিয়ে পেছন দিক থেকে ডুবতে থাকে। মঙ্গলবার সকাল থেকে উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে স্পিডবোট নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন উদ্ধারকারী দল।পাশাপাশি এনডিআরএফের ৩৫জন কর্মী উদ্ধারকার্য শুরু করেছে। ইতিমধ্যে একটি লরি উদ্ধার করলেও বাকি সাতটি লরি এখনও জলের তলায় রয়েছে। ফারাক্কা থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে হাড্রোলিক ক্রেন। ইতিমধ্যে নিখোঁদের খুঁজতে মালদা জেলা প্রশাসন ও ঝাড়খন্ড প্রশাসন তল্লাশি শুরু করেছে। এদের মধ্যে তারাচাঁদ যাদব ভেসেলের কর্মী বাকি দুইজন লরি চালক ও খালাসী। রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ও জেলাশাসক রাজর্ষী মিত্র। রাতভর উদ্ধারকার্যে সাহায্য করেন মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড় চন্দ্র মন্ডল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বাম ও কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল।
সুজন চক্রবর্তী বলেন, এই বিষয়টা নিয়ে রাজনীতি করার সঠিক নয় উদ্ধারকার্যে সাহায্য করা উচিত আমাদের।
বিজেপি নেত্রী শ্রীরুপা মিত্র চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন বেআইনিভাবে এখানে পারাপার হচ্ছে। এখানে যে নিয়ম আছে তা মেনে চলা হয় না। ওভারলোডিং এর কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাথর বোঝাই লরি গুলিতে ওভারলোডিং ছিল। এর জন্য দায়ী মালদা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ। সমস্ত ঘটনা কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হবে বলে তিনি দাবি করেন।
যদিও মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড় চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা সঠিক নয়। নির্দিষ্ট আইন মেনে টেন্ডার করা হয়। তার ভিত্তিতেই পারাপার হয়। প্রতিদিন ছয়টি লঞ্চ এখান থেকে ঝাড়খণ্ডের রাজমহল ঘাট পারাপার করে।যেমন যাত্রী পরিবহন হয় তেমনি পণ্য পরিবহন হয়’।
এদিকে গভীর রাতে অন্ধকার থাকায় এনডিআর এর একটি টিম উদ্ধারকার্য করতে নামতে পারেনি। সকাল থেকে তারা উদ্ধারকার্যে হাত লাগান। এনডিআর-এর আধিকারক প্রভাত কুমার ভুক্তি বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা এখানে কাজ করছে। ইতিমধ্যে দুটি বোর্ড উদ্ধারকার্য শুরু করেছে’।
জেলাশাসক রাজর্ষী মিত্র বলেন, ‘সকাল হতেই উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করা হলেও একজন নিখোঁজ রয়েছে তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঝাড়খন্ড প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রাখছে মালদা জেলা প্রশাসন’।