মৃত্যুর ২২ ঘন্টা পরেও ঘরে পড়ে রইল মৃতদেহ… করোনা সন্দেহে দেহ ছুঁলেন না মা ও ছেলে

শ্যাম বিশ্বাস, উওর ২৪ পরগনা: ফের অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল বসিরহাট শহর। মৃত্যুর ২২ ঘন্টার পরেও ঘরে পড়ে রইল মৃতদেহ। করোনা সন্দেহে দেহ ছুঁয়েও দেখল না মা ও ছেলে। বসিরহাট পুরসভার কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের ট্যা টরার বাসিন্দা বছর পয়ষট্টির বৃদ্ধ কিশোর সাহা পেশায় দোকানকর্মী। বুধবার সকাল পাঁচটা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়ার পর ছেলে ও নিজের স্ত্রী এই মৃত্যুর কথা কাউকে জানাতে অস্বীকার করেন। মৃতদেহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন তাঁরা। কারণ একটাই যে ছেলে শুভজিতের সন্দেহ বাবার করোনা হয়েছে। ছেলের বক্তব্যে সায় দিয়েছে মা। দুজনের বক্তব্য, গত সাত দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ে রয়েছে একবারও তাদের দিকে চোখ তুলে দেখিনি, মানে করোনা হয়েছে!
মৃত্যুর ২২ ঘণ্টা পরেও একইভাবে পড়ে রইল দেহ। আত্মীয়-স্বজন এমনকী প্রতিবেশীরা কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। তারা নিজেদের ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে বসে রয়েছে করোনার ভয়ে।
এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর পরিমল মজুমদার, কিছু কর্মী সমর্থক নিয়ে পিপিই কিট পরে হাজিরা হন। গতকাল রাত বারোটা নাগাদ, প্রথমে কিশোরবাবুর মৃতদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে মুখাগ্নি করে তার ছেলে। তাদের সঙ্গে ছি্লেন করোনা যোদ্ধা এলাকার কয়েকজন যুবক। মৃতদেহ বসিরহাট শ্মশানে এনে তার মরদেহ সৎকার করেন। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার মৃত বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ছেলে শুভজিৎ, স্ত্রী রিনা হিন্দু শাস্ত্র উপাচার মেনে মৃত বাবার কাজ করছেন। হতবাক বসিরহাট শহরের মানুষের বক্তব্য, করোনা মানুষকে ক্রমশ অমানবিক করে তুলছে।