স্ত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারে স্বামীকে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা আদালতের

মিলন পণ্ডা, হলদিয়া (পূর্ব মেদিনীপুর): স্ত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় অবশেষে স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করল হলদিয়া মহাকুমা আদালত। শুক্রবার হলদিয়া অতিরিক্ত দায়রা ফাস্ট ট্রাক ফাস্ট কোটের বিচারক প্রদীপ কুমার গঙ্গোপাধ্যায় অভিযুক্ত স্বামী আজহার উদ্দিনকে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার আদালতে বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এই মামলায় সরকারি আইনজীবী ছিলেন সোমনাথ ভূঁইয়া।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের নন্দীগ্রামে সালমাবাদ গ্রামের সেক আজহার উদ্দিনের সঙ্গে গ্রামের বাসিন্দা আলেয়া বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে অতিরিক্ত গয়নার দাবিতে নির্যাতন করতো স্বামী আজাহার সহ বাকি পরিবারের সদস্যরা। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ সকালে বাড়ির কড়িকাঠে দড়ি ফাঁস লাগানোর অবস্থায় আলেয়া বিবি (২১) ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহটি হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তে পাঠায়। মেয়ের মৃত্যু কোনমতেই স্বাভাবিক মেনে নিতে পারেনি তার বাপের বাড়ির সদস্যরা। খুনের অভিযোগ তোলেন মৃতার মা মর্জিনা বিবি। পরের দিন নন্দীগ্রাম থানার জামাই সহ বাকি পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে থানার অভিযোগ দায়ের করেন।
মৃতার বাপের বাড়ি অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। পুলিশ মৃতার স্বামী সেক আজহার উদ্দিন সহ পরিবারের সদস্যদের ভারতীয় দণ্ডবিধি ৪৯৮(এ), ৩০৪ (বি) ও ৩০২ সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে একের পর এক মৃতার শ্বশুরবাড়ি সদস্যদের গ্রেফতার করে। আদালত থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্তি পায়।
এই মামলায় সরকারি আইনজীবী ছিলেন সোমনাথ ভূঁইয়া এই মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালতের বিচারক। বৃহস্পতিবার ভারতীয় দণ্ডবিধি ৪৯৮(এ), ৩০৪ (বি) মৃতার স্বামী সেক আজাহার উদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। পরিবারের বাকি সদস্যদের প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস দেন বিচারক। শুক্রবার স্বামীকে ভারতীয় দন্ডবিধির দুটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এই রায়তে খুশি মৃতার বাপের বাড়ির সদস্যরা।