ট্রাকে ঠেকে যাওয়া বিদ্যুতের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু চালকের
প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: সন্তানকে আর দেখা হল না বাবার। সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার আগেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল বাবার। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানার পুরসার ডিভিসি পাড়ায়। পেশায় ট্রাক চালক মৃত ব্যক্তির নাম মণিরুল হাসান মল্লিক ওরফে রনি (২২)। পুরসা ডিভিসি পাড়াতেই তার বাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, এদিন সকালে ট্রাকের চালকের আসনে ওঠার সময় ট্রাকে ঠেকে যাওয়া বিদ্যুতের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় চালক মণিরুল হাসানের।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে পুরসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মণিরুলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিনই গলসি থানার পুলিশ যুবকের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান হাসপাতাল পুলিশ মর্গে পাঠায়।
মণিরুলের এমন অকাল মৃত্যুর জন্য তাঁর পরিবার বিদ্যুৎদফরের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন। গলসি থানার পুলিশ ট্রাক চালকের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুরসা ডিভিসি পাড়ার বাসিন্দা আনিসুল মিদ্দা জানিয়েছেন, লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পরেই মণিরুল ট্রাক নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। সেই থেকে তাঁর বাড়ির সামনের রাস্তায় ট্রাকটি দাঁড় করানো ছিল। লকডাউনের কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হওয়ায় এদিন ট্রাক নিয়ে মাল লোড করতে যাওয়ার কথা ছিল মণিরুলের। লকডাউনের মধ্যে পথে যাতে খাওয়ার কষ্ট না হয় তার জন্য এদিন সকালেই মণিরুল চালকের আসনের কেবিনে উঠে স্টোভ ও বাসনপত্র চাপাতে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মৃতর আত্মীয় জিয়াউর রহমান মল্লিক জানালেন , “মণিরুল ছিল পরিবারের এক মাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। তাঁর দাদা সামান্য একজন ভ্যান চালক। বছর দেড়েক আগে বীরভুমের লাভপুরের তরুণী সুহানার সঙ্গে মণিরুলের বিয়ে হয়। বর্তমানে সুহানা বেগম ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
গলসি বিদ্যুৎ সহায়তা কেন্দ্রের স্টেশন ম্যানেজার সুবীর বিশ্বাস বলেন, ‘পুরসার ওই দুর্ঘটনার খবর পেয়েই তিনি এলাকায় প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন। কভার তারে এমন ঘটনা কি করে ঘটল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে গাফিলতি ধরা পড়লে যথাযথ ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।